গতকাল এক দিনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ওয়ানডে বিশ্বকাপের দুই ম্যাচ আর দুই ম্যাচেই শুরুতে যারা ব্যাট করেছে, তারা তুলেছে রানের ঝড়। আর মজার বিষয় হচ্ছে, যে দুই দল এদিন এমন কাণ্ড করেছে, তারা এই আসরে ভিন্ন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেই হেরেছিল বড় ব্যবধানে। হয়তো সেই প্রতিশোধই নিয়েছে গতকাল মাঠে নেমে।
মঙ্গলবার দিনের প্রথম ম্যাচে ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট সংস্থা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। আর এই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলারদের পালাবদল করে ক্লাস নিয়েছেন জনি বেয়ারস্টো, দাভিদ মালান ও জো রুট। এতে বড় সংগ্রহও পায় তারা। যেখানে তারা প্রথম ম্যাচে হেরেছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে।
এদিকে একই চিত্র দেখা গেছে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচেও। হায়দ্রাবাদের রাজিব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এ খেলায় মুখোমুখি হয় শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান। ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে লঙ্কান ব্যাটাররা পাকিস্তানি বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করেছেন। মূলত শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমাই করেছেন এমন কাজ। দুজনেই তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরিও। তার মধ্যে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়েন মেন্ডিস।
তবে এই ম্যাচের শুরুতে এমন আভাস পাওয়া যায়নি। ব্যক্তিগত রানের খাতা খোলার আগেই পেসার হাসান আলী ফেরায় লঙ্কান ওপেনার কুশল পেরেরাকে। দলীয় রান তখন কেবল ৫। তবে তখনো যে ম্যাচের অনেক কিছু ছিল বাকি। দ্বিতীয় উইকেটে কুশল মেন্ডিস নেমে একে একে পাকিস্তানি পেসারদের ক্লাস নেওয়া শুরু করেন। যদিও তাকে ব্যক্তিগত ১৮ রানে ফেরাতে পারতেন বাবর আজমরা।
শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে ক্যাচ উঠিয়েও বেঁচে যান তিনি। কারণ ইমাম-উল হক ক্যাচ ছেড়ে দিয়েছিলেন। আর জীবন পেয়েই টি-টোয়েন্টি স্টাইলে বাকি ইনিংসটুকু খেলেন মেন্ডিস। তাতে ৬৫ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি। সাজঘরে ফেরার আগে ৭৭ বলে ১১ চার ও ২ ছয়ের মারে ১৫৮.৪৪ স্ট্রাইক রেটে ১২২ রানের এক বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
এদিকে বিশ্বকাপে ৬৫ বলে সেঞ্চুরি করে মেন্ডিস ভেঙেছেন লঙ্কান সাবেক কিংবদন্তি উইকেটরক্ষক ব্যাটার কুমার সাঙ্গাকারার রেকর্ড। এর আগে সাঙ্গাকারা ২০১৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭০ বলে সেঞ্চুরি করে এই রেকর্ড নিজের নামে করে নিয়েছিলেন। অন্যদিকে মেন্ডিসের এই সেঞ্চুরি বিশ্বকাপ ইতিহাসে ষষ্ঠ দ্রুততম সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপের অন্য পাঁচটি দ্রুততম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া খেলোয়াড়েরা হলেন প্রোটিয়া ব্যাটার এইডেন মার্করাম (৪৯ বলে), আইরিশ ব্যাটার কেভিন ওব্রায়েন (৫০ বলে), অসি অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৫১ বলে), এবি ডি ভিলিয়ার্স (৫২ বলে) এবং গত আসরের বিশ্বকাপ জয়ী ইংলিশ অধিনায়ক ইয়োন মর্গান (৫৭ বলে)।
অন্যদিকে মেন্ডিসকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে এই ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন সাদিরা সামারাবিক্রমাও। এতে করে বিশ্বকাপ ইতিহাসে চতুর্থবারের মতো একই ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরির জুটি দেখেছে শ্রীলঙ্কা। সবশেষ ২০১৫ বিশ্বকাপে ওয়েলিংটনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছিল দেশটি। এছাড়া বিশ্বকাপে একই ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি সেঞ্চুরির ঘটনা এটি দ্বিতীয় বার। সবশেষে ২০১৯ বিশ্বকাপে জো রুট ও জস বাটলার সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন।