ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সরকারি অনুমতি পেয়েছে পৌনে ছয় লাখ টন আর গত সোমবার পর্যন্ত ২৬ হাজার টন পেঁয়াজ স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করেছে দেশে। বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ বাজারে আসায় দামে ধস নেমেছে।
খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল কেজি ৩০ থেকে ৩২ টাকায় আর ভারতীয় পেঁয়াজ ২৮ থেকে ২৯ টাকা এবং নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৩৪ থেকে ৩৫ টাকায়। পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির আগে ২ জুলাই দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৫০ টাকায়।
১৫ দিনের ব্যবধানে দাম কমে হাতের নাগালে এলেও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের ক্রেতা মিলছে না।
কেন জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের আড়তদার মোহাম্মদ ইদ্রিস কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এত দাম কমার পরও পাইকারি বাজারে আশ্চর্যজনকভাবে ক্রেতা নেই। দাম আরো কমবে—এমন শঙ্কায় একেবারে মেপে মেপে পেঁয়াজ কিনছেন খুচরা বিক্রেতারা। ফলে বাজারে সরবরাহ প্রচুর থাকলেও বিক্রি নেই বললেই চলে। ’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের মানুষ এমনিতেই দেশি পেঁয়াজ কম পছন্দ করে, কিন্তু বিকল্প না থাকায় এত দিন দেশীয় পেঁয়াজে নির্ভরশীল হয়েছিল। এখন ভারতীয় পেঁয়াজ আসায় খাতুনগঞ্জে দেশি পেঁয়াজের কদর কমেছে। ফলে দামও কমেছে। আমদানি অনুমতির আগে দেশীয় পেঁয়াজ ৫০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ’
উল্লেখ্য, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় সরকারের কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংগনিরোধ দপ্তর। প্রতিষ্ঠানটির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নিতাই চন্দ্র বণিক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘৩ জুলাই আমদানির অনুমতি দেওয়ার পর থেকে গত ১৭ জুলাই পর্যন্ত পৌনে ছয় লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বা আইপি দিয়েছি। প্রথমদিকে যে পরিমাণ অনুমতির আবেদন ছিল এখন সেটি কমে এসেছে। আমার মনে হয় চাহিদা অনুযায়ী অনুমতি নেওয়া শেষ। সেই কারণে আবেদন কমেছে। ’
তিনি বলেন, ‘আইপির বিপরীতে গত ১৭ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ২৬ হাজার টন পেঁয়াজ দেশে ট্রাকে করে স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করেছে। প্রতিদিনই পেঁয়াজ আসছে দেশে। এর প্রভাব দেশের বাজারে এর মধ্যেই পড়েছে।
দেশে পেঁয়াজের ভালো উৎপাদন হওয়ায় সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বন্ধ রেখেছিল। ফলে কয়েক মাস দেশীয় পেঁয়াজ একচেটিয়া বাজার দখল করে ছিল। দামও অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় ভালো পেয়েছিল কৃষক। কিন্তু কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে হঠাৎ করেই অস্থির হতে থাকে দেশের পেঁয়াজ বাজার। ফলে দাম বেড়ে ৫০ টাকা ছাড়িয়ে যায় পাইকারিতেই। এই অবস্থায় সরকারের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরামর্শে সরকার ৩ জুলাই থেকে ভারতের পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেয়। এরপর থেকেই মূলত দাম নাগালের মধ্যে চলে আসে।