ফিফা ২০২৬ বিশ্বকাপ এবং আগামী বছর এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে বাংলাদেশের সম্ভাবনা প্রবলভাবেই টিকে রইল। বাংলাদেশ ১-১ গোলে মালদ্বীপের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ ড্র করেছে। মালদ্বীপের মালেতে অনুষ্ঠিত ফিফা রাউন্ড-১ এর প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ০-১ গোলে পিছিয়ে ছিল। খেলা শেষে যোগ হওয়া সময়ে গোল করে ম্যাচের হার বাঁচিয়ে ১-১ গোলে ড্র করেছে বাংলাদেশ। হোম ম্যাচ হবে আগামী ১৭ অক্টোবর, ঢাকায় বসুন্ধরা কিংসের মাঠে। এই ম্যাচ গোল শূন্য ড্র হলে বাংলাদেশ চলে যাবে গ্রুপ পর্বে।
খেলার ৮৬ মিনিটে রক্ষণে বক্সের ভেতরে একটা ভুলে গোল হজম করেছে বাংলাদেশ। মালদ্বীপের হামজার ক্রসের বল পায়নি তার স্ট্রাইকার হাসান নাজিম। ডিফেন্ডার তারিক কাজী লাফিয়ে উঠে হেড করেন। বলটা আরেক ডিফেন্ডার বিশ্বনাথের গায়ে লেগে মালদ্বীপের ইব্রাহিম হুসেনের পায়ে পড়লে তিনি দেরি করেননি। গোলরক্ষক মিতুলকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন ১-০। খেলার শেষ মুহূর্তে এমন গোল হজম করেও বাংলাদেশের ফুটবলাররা হতাশ হয়ে পড়েননি। আক্রমণের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন। অতিরিক্ত ৫ মিনিট দেন ইরানী রেফারি সৈয়দ ভাহিদ কাজেমি। আক্রমণের ধারা রেখে বাম দিক দিয়ে রাকিব হোসেন ক্রস করে মালদ্বীপের রক্ষণে ফাঁকায় বল ফেলেন। বদলি ফুটবলার সাদ উদ্দিন নিশানা ভেদ করে গোল করেন ১-১, নিশ্চিত হারতে যাওয়া ম্যাচের জীবনটা বাঁচিয়েছেন। বাংলাদেশকে কঠিন সমীকরণ থেকে সহজ সমীকরণে বাঁচিয়ে রাখলেন সাদ উদ্দিন।
মালের স্টেডিয়ামে প্রায় ২ হাজার ৬০০ দর্শকের মধ্যে বাংলাদেশের সমর্থকরাও ছিলেন ফুটবলারদের প্রেরণা দিয়েছেন। জাতীয় পতাকা নিয়ে সারাক্ষণ আওয়াজ তুলেছেন। মালদ্বীপ একাধিক সুযোগ নষ্ট করেছে। মালদ্বীপের রাফি হাসানের বল একাই মোকাবিলা করেছেন। দ্বিতীয়ার্ধে মালদ্বীপের অধিনায়ক আলী ফজিরের শট দৌড়ে এসে কর্নার করে না বাঁচালে গোল হয়ে যেত। দারুণ খেলেছেন গোলরক্ষক মিতুল মারমা। এশিয়ান গেমসে চীনের বিপক্ষেও দুর্দান্ত খেলেছেন তিনি। কালও মালদ্বীপের বিপক্ষে নজরকাড়া লড়াই করেছেন। একাধিক গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড ফাহিম। মালদ্বীপের গোলরক্ষককে একা পেয়েও ক্রসবারের উপর দিয়ে বল বাইরে পাঠিয়ে দলকে বঞ্চিত করেছেন।
অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া দলের জন্য তেমন কিছুই করতে পারছিলেন না। জামালকে মাঠ থেকে তুলে নেওয়ার পরও রক্ষণের কাজী তারিকের অমার্জনীয় ভুলে গোল হলেও রবিউল হাসানকে নামানো হলে আক্রমণে তেজ বেড়ে যায়। মাঠে নেমেই বল নিয়ে মালদ্বীপের বক্সে বডিডজ দিয়ে বল ঘুরিয়ে বাম পায়ে জোরাল শট করেন। মালদ্বীপের গোলরক্ষক শারিফ হুসেন কোনো রকমে কর্নার করে ঠেকান। জালে ঢেডকার আগে বল বাইরে ফেলেন। স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা ৯০ মিনিটে ডিফেন্ডার বিশ্বনাথকে তুলে নিয়ে সাদ উদ্দিনকে আক্রমণে ঠেলে দেন। দুই মিনিটের মধ্যে আক্রমণে ফাহিমের উত্স হতে সাদ উদ্দিন গোল করে নিশ্চিত হারের ম্যাচ থেকে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনেন। জার্সি খুলে দৌড়ে যান, রেফারি হলুদ কার্ড দেন সাদ উদ্দিনকে। খেলার শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে তারিক কাজী সাদ উদ্দিনকে জড়িয়ে ধরে আবেগ আপ্লুত হন। তারিকের ভুলেই যে গোল হজম করেছিল বাংলাদেশ। সমালোচনা থেকে রক্ষা।