জরায়ুমুখ ক্যানসারে মৃত্যু শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে উদ্বোধন হলো স্কুল পর্যায়ে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম। প্রাথমিকভাবে শুধু ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন স্কুলে ২৩ লাখ কিশোরীকে এই টিকা প্রদান করা হবে।
গতকাল রবিবার সকালে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত টিকা কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মাদ খুরশীদ আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি ও ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডা. মো. আখতারুজ্জামান, ডিজিএইচএসের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ড. আহমেদুল কবির, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী, ইউনিসেফ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ডা. রিয়াদ মাহমুদ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ডা. রাজেন্দ্র বহরা।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রাণঘাতী এক রোগ। দেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী এই রোগে ভুগে মারা যাচ্ছেন প্রতি বছর। টিকার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। ফলে দেশব্যাপী স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই টিকা কার্যক্রম শুরু হলো। এইচপিভি টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এর সফল ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও সম্পন্ন হয়েছে। আগামীতে দেশের সব নারীদের এই টিকার আওতায় আনা হবে। যার মধ্য দিয়ে জরায়ুমুখ ক্যানসারে নারী মৃত্যুও কমে আসবে।
অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মাদ খুরশীদ আলম স্ক্রিনিং টেস্টের মাধ্যমে জরায়ুমুখ ক্যানসারের বিষয়ে সচেতন হতে আহ্বান জানান সব বয়সী নারীদের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতনতা বাড়ানোর প্রক্রিয়াকে আরও জোরদার করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশ সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং গ্যাভির (এধার) সহযোগিতায় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালিত এই ভ্যাকসিন কার্যক্রমের আওতায় পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি বা সমমান অধ্যয়নরত এবং ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে। ভিকারুন নিসা নূন স্কুলের পাশাপাশি ঢাকা শহরের ১৩৮টি স্কুলে একযোগে এই টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ইউনিসেফের পক্ষ থেকে বলা হয়, জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধী এইচপিভি টিকা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যে সাড়ে ৫ লাখেরও বেশি মানুষ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রতি ১ লাখ নারীর মধ্যে ১১ জন জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। বাংলাদেশে বছরে মৃত্যুবরণ করেন ৪ হাজার ৯৭১ জন। এইচপিভি ভ্যাকসিন কার্যক্রম অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী এক মাস বা ১৮ কর্মদিবস ব্যাপী চলবে। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের ইপিআই-এর সেশন প্ল্যান অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখে টিকাদান কেন্দ্রে নিয়মিত টিকাদানের পাশাপাশি এইচপিভি টিকা দেওয়া হবে। এইচপিভি টিকা পেতে আগ্রহীদের অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করতে হবে লিংকে গিয়ে- www.vaxepi.gov.bd
সম্পাদক- বখতিয়ার রহমান
প্রকাশক- শাওন ফারহানা
নির্বাহী সম্পাদক- ফরিদ সুমন
© 2024 banglatimes360.com - - BT360.