আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত অনুযায়ী, এ বছরের ডিসেম্বর শেষে বাংলাদেশকে অন্তত ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার নিট বৈদেশিক মুদ্রার মজুত রাখতে হবে। কিন্তু বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষপটে আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামিয়ে আনার অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। আইএমএফ মিশন এই অনুরোধে সম্মতি প্রকাশ করেছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
আইএমএফের দেওয়া আরেকটি শর্ত হলো, চলতি বছরের শেষ নাগাদ জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় দাম নির্ধারণ করা। অর্থ মন্ত্রণালয় এই শর্তের সময়সীমা আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
আইএমএফের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে ঢাকা অবস্থান করছেন। বাংলাদেশকে দ্বিতীয় কিস্তি ঋণ দেওয়ার আগে শর্ত পূরণ যাচাই করতে ৪ অক্টোবর দেশে আসে আইএমএফের প্রতিনিধিদল। ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল রাখতে কিছু শর্ত দেয়। মোট ৭ কিস্তিতে বাংলাদেশের এই অর্থ দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ রয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে কিছু শর্ত অর্জনযোগ্য না হওয়ায় সফররত আইএমএফ স্টাফ মিশনকে কয়েকটি লক্ষ্যমাত্রা সংশোধনের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। আইএমএফের ঋণের শর্ত অনুযায়ী, এ বছরের ডিসেম্বর শেষে বাংলাদেশকে অন্তত ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার নিট বৈদেশিক মুদ্রার মজুত রাখতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১১ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশের মোট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে। আইএমএফ মিশনের সফরের শেষ দিন আগামী ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থ সচিবের সঙ্গে সমাপনী বৈঠক করবেন। সেখানে আগামী বছরের ডিসেম্বর ও জুনের জন্য নতুন পরিমাণগত শর্ত চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে। দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়ার আরেকটি শর্ত ছিল রাজস্ব আদায় বাড়ানো।
গত সপ্তাহে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে তাদের শর্ত অনুযায়ী কীভাবে বাড়তি শুল্ক-কর আদায় হবে, সেই পরিকল্পনা জানতে চেয়েছেন আইএমএফের সফররত কর্মকর্তারা। স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক-কর আদায়ের শর্ত দেওয়া হয়েছে। এনবিআর শুল্ক, কর এবং ভ্যাট বিভাগ আলাদা আলাদাভাবে বাড়তি শুল্ক-কর আদায়ে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে।