মনসুর আলম খোকন
চন্দ্রাবতী ষোড়শ শতকের অন্যতম কবি। তিনি বাংলা ভাষার প্রথম মহিলা কবি হিসেবে স্বীকৃত। চন্দ্রাবতী ১৫৫০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর বাবা দ্বিজবংশী দাশও কবি ছিলেন। দ্বিজবংশী দাশ বিখ্যাত কাব্য ‘মনসা মঙ্গল’ এর রচয়িতা। চন্দ্রাবতীর মায়ের নাম সুলোচনা।
কিশোরগঞ্জ শহর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে পাতোয়াইর গ্রামের ফুলেশ্বরী নদীর পাশে কারুকার্য মন্ডিত দুটি শিবমন্দির রয়েছে। এই মন্দিরই কবি চন্দ্রাবতী শিব মন্দির বা কবি চন্দ্রাবতী মন্দির হিসেবে খ্যাত। ধারণা করা হয়, এই মন্দির দুটির সাথে কবির জীবনের বিভিন্ন ঘটনার অনেক সম্পৃক্ততা রয়েছে।
লোকশ্রুতি রয়েছে, কৈশোরে কবি চন্দ্রাবতীর সাথে ব্রাহ্মণ যুবক জয়ানন্দের গভীর প্রণয় হয়। তাদের এ সম্পর্কের কথা মেনে কবির বাবা তাদের বিবাহের দিনও ধার্য করেন। এদিকে জয়ানন্দ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ধর্মান্তরিত হয়ে এক মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করে। এই ঘটনায় কবি চন্দ্রাবতী ভীষণভাবে ভেঙে পড়েন। এসময় উপাসনার জন্য তিনি পিতার কাছে একটি মন্দির স্থাপনের অনুরোধ জানান। কন্যার আবদার রক্ষায় দ্বিজবংশী দাশ ফুলেশ্বরী নদী তীরে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। আজ অবধি এই কবি চন্দ্রাবতী মন্দির ফুলেশ্বরী নদী তীরে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
তাঁর রচনাগুলো হলো-মলুয়া, দস্যু কেনারামের পালা, মনসার ভাসান, রামায়ণ(অসমাপ্ত)।
লেখক: শিক্ষক ও সাংবাদিক।