বিদ্যা সীনহা মীম। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত এই অভিনেত্রী ঢালিউড-টালিউডে একই সমান্তরালে কাজ করছেন নিয়মিত। নিজের অভিনয় নিষ্ঠা আজ তাকে এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে। সম্প্রতি শেষ করলেন টালিউড সুপারস্টার জিত-এর সাথে তার নতুন ছবি ‘মানুষ’। ছবিটি নির্মাণ করেছেন বাংলাদেশের নির্মাতা সঞ্জয় সমাদ্দার। বিশেষ এই কাজটি নিয়েই আনন্দ বিনোদনে বিস্তারিত বলেছেন এই চিত্রনায়িকা।
আপনার অভিনীত ‘মানুষ’ সিনেমাটি কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে। দেশে মুক্তির কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা?
হ্যাঁ, সিনেমাটি আগামী ২০ নভেম্বর কলকাতায় মুক্তি পাবে। ক’দিন আগে টিজার প্রকাশ পেয়েছে। সামনে ট্রেলারও প্রকাশ করা হবে। সিনেমাটি ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ দেখে সত্যি ভালো লাগছে। আশা করছি, সিনেমাটি মুক্তির পরও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। তবে বাংলাদেশে ‘মানুষ’ মুক্তির বিষয়ে যতদূর জানি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
সিনেমাটির গল্প-চরিত্র নিয়ে জানতে চাই—
‘মানুষ’-এর গল্প নিয়ে বলা নিষেধ আছে। তবে এতটুকু বলবো, মানুষের গল্পই সিনেমাটিতে দেখা যাবে। এতে আমি পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেছি।
অভিনেতা জিতের সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো স্ক্রিন শেয়ার করছেন। অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
জিত দা আমার পছন্দের একজন অভিনেতা! তাছাড়া ভাইয়া (জিত) অসম্ভব বন্ধত্বপূর্ণ একজন মানুষ। তার সঙ্গে যেকোনো শিল্পী কাজ করলে কখনও মনে হবে সে সুপারস্টার। হিরো ভাব-সাব নিয়ে তিনি কখনও চলেন না।
দুই বাংলার কাজে ভিন্নতা কোথাও খুঁজে পান?
কাজের ক্ষেত্রে দুই ইন্ডাস্ট্রির অনেক পার্থক্য রয়েছে। ওরা খুবই প্রফেশনাল। বাজেটও বেশি। তাছাড়া শিল্পীদের রেস্টের বিষয়টিও ওরা মাথায় রাখে। যেটা আমাদের দেখে কখনোই দেখতে পাবেন না। সত্যি বলতে, আমাদের দেশে যে ওয়েতে কাজ করা হয় সেটা আমার মনে হয় না বিশ্বের কোথাও করা হয়।
ওপার বাংলার তারকারা এদেশের শিল্পীদের সেখানে কাজ করা নিয়ে বিভিন্ন সময় মন্তব্য করে থাকেন। সে জায়গা থেকে কখনও নেতিবাচক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে কিনা?
না, তেমন কোনো অভিজ্ঞতা আমার হয়নি। ওখানে যে হাউজেরই কাজ করেছি তারা আমাকে প্রপার সম্মানটুকু দিয়েছে। আমি বাংলাদেশ থেকে গিয়েছি, এটা কখনও তারা ভাবেননি। ওদের মিমি, নুসরাতরা যতটা সম্মান পায় আমাকেও ততটাই দেওয়া হয়েছে।
‘পরাণ’ দিয়ে হলে দর্শক ফিরেছিল। কিন্তু এরপর অনেকগুলো সিনেমা হলে এলেও দু-একটি ছাড়া কোনোটিই দর্শক টানতে পারেনি। এর কারণ কী বলে মনে করেন?
দেখুন, এটা ডিপেন্ড করে গল্প-অভিনয়, মেকিংয়ের ওপর নির্ভর করে। দর্শক কিন্তু ভালো কাজ ভালো হলে দেখছে। তাছাড়া একটি সিনেমা কারও কাছে ভালো লাগলে সেটা মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে।
এই সিনেমাটি মীমকে কাজের ক্ষেত্রে আরও বিচক্ষণ করেছে কিনা?
হ্যাঁ, অবশ্যই। যে কারণেই তো এখন সেভাবে নতুন সিনেমায় যুক্ত হচ্ছি না। কাজের অফার আসছে না তেমন তো না। এখনও আমার বাসায় অনেক স্ক্রিপ্ট পড়ে আছে।
‘দিগন্তে ফুলের আগুন’ নামের একটি সিনেমায় শ্যুটিং করছেন। কতটুকু শেষ করেছেন?
সিনেমাটির শ্যুটিং শেষ। শিগগিরই ডাবিং শুরু করবো।
বলছেন, কাজের ক্ষেত্রে আরও বিচার-বিবেচনা করছেন। সেই জায়গা থেকে এই সিনেমাটিতে যুক্ত হওয়ার বিশেষ কোনো কারণ রয়েছে কিনা?
হ্যাঁ, সিনেমাটি একটু ভিন্ন ট্র্যাকের। এটা বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে যাবে। তাছাড়া রিয়েল লাইফের একটি গল্পে সিনেমাটি নির্মিত হচ্ছে। পাশাপাশি নির্মাতাও অনেক ভালো। যে কারণে সিনেমাটিতে যুক্ত হয়েছি।
এ ধরনের গল্পের এক সময় জনপ্রিয় তারকা অনীহা প্রকাশ করলেও এখনও অনেকেই যুক্ত হচ্ছেন। এর কারণ কী?
আমি কিন্তু শুরু থেকেই এ ধরনের গল্পের সিনেমায় কাজ করেছি। কমার্শিয়াল সিনেমার পাশাপাশি অফ ট্র্যাকের সিনেমাতেও কাজ করছি নিয়মিতই। তবে অন্যদের কথা বলতে পারছি না।
ওটিটির জন্যও ইদানিং সিনেমা নির্মিত হচ্ছে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
আমার কাছে কখনোই ওটিটির সিনেমাকে সিনেমা মনে হয়নি। ওই কাজগুলো দেখলে নাটকের মতোই ফিল হয়।
এর বাইরে নতুন কোন কাজগুলো নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
চলতি মাসে বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনের কাজ শেষ করলাম। আগামী মাসে মাঝামাঝি অবধি এই ব্যস্ততা থাকবে। তাছাড়া বিগত ২ মাসও সিনেমার শ্যুটিং থাকায় নতুন কোনো কাজে হাত দিতে পারিনি। আসলে আমি তো একটু বেছে বেছে সময় নিয়ে কাজ করি, তাই হুট করে কোনো কাজে যুক্ত হতে চাই না। তবে বেশ কিছু স্ক্রিপ্ট হাতে রয়েছে। সব কিছু চূড়ান্ত হলে জানাবো।