বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত পোশাকের কদর বাড়ছে। ফ্যাশনদুরস্ত নতুন পোশাকের চেয়ে পুরোনো পোশাকের বাজার বাড়ছে দ্রুত হারে। ধারণা করা হচ্ছে, পোশাকের মূল বিশ্ববাজার অর্থাৎ নতুন পোশাকের বৈশ্বিক ফ্যাশন বাজারকে ছাড়িয়ে যাবে পুরোনো পোশাক। বর্তমানে এ ধরনের পোশাকের বাজার ১৭৫ বিলিয়ন ডলারের। আগামী ২০২৭ সাল নাগাদ অর্থাৎ মাত্র চার বছরের ব্যবধানে দ্বিগুণ হবে এটি। ৩৫০ বিলিয়ন ডলারে পরিণত হতে পারে পুরোনো কাপড়ের বিশ্ববাজার।
বস্ত্র ও পোশাকবিষয়ক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টেক্সস্পেস টুডের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। অবশ্য এ সম্পর্কিত পরিসংখ্যানের কোনো সূত্র বা বরাত উল্লেখ করা হয়নি প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর খুচরা বাজারে পোশাক ক্রেতাদের ৫২ শতাংশ সেকেন্ড হ্যান্ড বা ব্যবহৃত পোশাক কিনেছেন। তাদের ৭৫ শতাংশ এ ধরনের পোশাকের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন। আরও অবাক করা তথ্য হচ্ছে, ৮৩ শতাংশ জেনারেশন জেড (জেন জেড) প্রজন্মের ভোক্তা ব্যবহৃত পোশাক কেনাকাটা করেছেন বা কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
জেন জেড প্রজন্ম হচ্ছে ১৯৯৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে যাদের জন্ম। অর্থাৎ তাদের বয়স ১৩ থেকে ২৭ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের উদ্বেগজনিত পরিবেশ সচেতনতা, ডিজিটাল রূপান্তর ও করোনার প্রত্যক্ষ প্রভাব এবং এ সম্পর্কিত অর্থনৈতিক ভাবনা রয়েছে। এই জেন জেড প্রজন্ম অন্যান্য পণ্যের মতো বস্ত্র ও পোশাকের বাজারের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বৈশ্বিক জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলায় পানিসহ প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার কমানো এবং উত্পাদন কাজে কার্বন নিঃসরণ কমাতে নতুন উত্পাদন নিরুত্সাহিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যবহৃত পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। টেক্সস্পেস টুডের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ব্যবহৃত পোশাকের চলতি বাজার প্রবণতায় কিছু ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানও এ ধরনের পোশাকের বাজারে প্রবেশ করেছে। এ ক্ষেত্রে লিভাইস, টোরিড, প্যাটাগনিয়া, কেট স্ত্রেড, ইভারলেন এরকম কয়েকটি ব্র্যান্ডের কথা উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
চাহিদা বাড়ায় এ ধরনের পোশাকের বিপণন নেটওয়ার্কে নিত্যনতুন বাণিজ্যিক কার্যক্রম গড়ে উঠছে। ব্যবহৃত পোশাকের বাজারে নানা ধরনের বিপণন নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে। ‘নিউ লুক’-এর মতো অনেক প্ল্যাটফর্ম দাঁড়িয়ে গেছে। সহযোগী বা পশ্চাত্সংযোগ সেবা হিসেবে পুরোনো কাপড়কে পরিষ্কার করার উদ্যোগ ‘ক্লিন আউট’ কর্মসূচির মতো কাজ যুক্ত হয়েছে সরবরাহ চেইনে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পুরোনো কাপড়ের পোশাক ডিজাইন করার জন্য ডিজাইনার রিসেল সাইটের মতো অনলাইনভিত্তিক অনেক সাইট তৈরি হয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকায় দামি পোশাক ভাড়ায় নেওয়া যায়।