বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, ‘বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশকে বানচাল করতে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগ কাকরাইল মোডে বিএনপির মহাসমাবেশে আসা নেতাকর্মী ও জনসাধারণের ওপর আক্রমণ করে। একই সঙ্গে সরকারের আজ্ঞাবহ পুলিশ বাহিনী সরকারী দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে সমাবেশ বানচালের জন্য মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ, সাউন্ড গ্রনেড বিস্ফোরণ, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করতে করতে নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ বানচালে লিপ্ত হয়। পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে যোগ হয় আওয়ামী লীগের পাল্টা সমাবেশে লগি-বৈঠা নিয়ে আসা আওয়ামী ক্যাডাররা।’
সোমবার (৩০ অক্টোবর) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন কায়সার কামাল।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির বাসভবনে কথিত ভাঙচুরের ঘটনাটিও এই নাটকের অংশ যেন বিএনপি নেতাকর্মিরা বিচার বিভাগ থেকে কোন ন্যায় বিচার না পান।’
কায়সার বলেন, ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে ঢাকায় সভা-সমাবেশ করার ক্ষেত্রে ডিএমপি কমিশনারের অনুমতি গ্রহণের কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। তবুও মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের বিষয়টি বিএনপির পক্ষ থেকে ডিএমপি কমিশনারকে বেশ আগেই লিখিতভাবে অবহিত করা হয়। কিন্তু অতীতের মতো এই মহাসমাবেশ বানচাল করার লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন দল পুলিশকে ব্যবহার করে তথাকথিত অনুমোদনের নামে নানা ছলচাতুরি করতে থাকে। সমাবেশের এক সপ্তাহ আগে থেকে সারাদেশে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। পথে পথে নানারূপ হয়রানি করা হয়। এমনকি সমাবেশপূর্ব রাতে তথাকথিত ককটেল উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে ও বিভিন্ন পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মহাসমাবেশের দিন ১২ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মিকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপরেও শত বাধা-বিপত্তি, মামলা-হামলা উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ জনতা বিএনপির মহাসমাবেশে যোগদান করেন। এতে হতবিহবল হযে ক্ষমতাসীন দল সেই পুরনো খেলায় মেতে উঠে। তাদের আক্রমনে একজন যুবদল নেতা শামিম মোল্লা নিহত হন। একজন পুলিশ কন্সটেবলও নিহত হন। পুলিশের টিয়ারসেলে গুরুতর আহত একজন সিনিয়র সাংবাদিক রফিক ভূইয়া পরদিন মৃত্যুবরণ করেন। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বহু সাংবাদিক গুরুতর আহত হন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ আওয়ামী লীগের যৌথ হামলায় বিএনপি’র মহাসমাবেশ পন্ড করার ঘটনাটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে একের পর এক মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের, বিএনপি মহাসচিবসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার, রিমান্ডে গ্রহণ, বিএনপি অফিসকে তালাবদ্ধ করে রাখা- এ সবই জনপ্রিয় দল বিএনপিকে নেতৃত্বশূণ্য করার নীল নকশার অংশ। যাতে বিএনপি এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে চলমান “এক দফার আন্দোলন থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে। আমরা বিশ্বাস করি গণতন্ত্রের এই লড়াই অব্যাহত থাকবে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে তথাকথিত রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বসহ সারাদেশের বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আটক নেতাদের অবিলম্বে মুক্তি ও দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এ জে মোহাম্মদ আলী, সুব্রত চৌধুরী, সৈয়দ মামুন মাহবুব, বদরুদ্দোজা বাদল, রুহুল কুদ্দুস কাজল, গাজী কামরুল ইসলাম সজলসহ অনেকে।