বাংলাদেশের বিপক্ষে সহজ এক জয়ের পর পাকিস্তান ক্রিকেট দলে খানিকটা স্থিরতা এবং স্বস্তি ফিরে এসেছে। টানা চার ম্যাচে হারের মধ্যেই পাকিস্তান দলের প্রধান নির্বাচকের পদ থেকে ইনজামাম উল হক সরে দাঁড়িয়েছেন।
এরই মাঝে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড দুই দফায় বিবৃতি দিয়েছে, একবার বলেছে দল গঠনে পূর্ণ স্বাধীনতা ও সমর্থন পেয়েছেন বাবর আজম এবং ইনজামাম উল হক।
আরেক বিবৃতিতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দল গঠনের পেছনে স্বার্থের সংঘাত রয়েছে কি না খতিয়ে দেখার কথা বলেছে।
অর্থাৎ ঝড়ো একটা পরিবেশেই পাকিস্তান ক্রিকেট দল ভারতের মাটিতে ক্রিকেট খেলছে, যেখানে আবার তাদের সমর্থকদের একটা বড় অংশই ভিসা পাননি।
এবং চলমান পরিস্থিতিতে দেশটির ক্রিকেট বোর্ডও পুরোপুরি এই স্কোয়াডের ক্রিকেটারদের সঙ্গে নেই।
এমনকি পাকিস্তানের টিম ডিরেক্টর মিকি আর্থার বলেছেন, “যেভাবে বাবর আজম, ইনজামামের ওপর আঙ্গুল তোলা হচ্ছে এটা খুবই অন্যায়। দল হারছে, তবে চেষ্টা করছে সবাই মিলে। সবাই টপ কোয়ালিটি ক্রিকেটার এখানে, শুধু ফর্ম আর পারফরম্যান্সের তাল মিলছে না”।
এমন সময়ে দোষারোপ করাটা ঠিক না বলে মনে করেন মিকি আর্থার।
‘পাকিস্তান ভয়ানক দল’- ভন
ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার মাইকেল ভন ক্রিকবাজের বিশ্লেষণে বলেছেন, এটা পাকিস্তানের ক্রিকেটে নতুন কিছু না।
তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন ২০০৯ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা, যেবার পাকিস্তান ক্রিকেট দল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জয় পেয়েছিল। সেবারও পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক পদত্যাগ করেছিলেন টুর্নামেন্টের মাঝপথে।
মাইকেল ভন বলেছেন, “যদি কোনও দল বিতর্কের সাথে যুদ্ধ করতে পারে সেটা পাকিস্তান। পাকিস্তান ভয়ানক দল, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যদি তারা ভালো খেলে শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ড আছে”।
হারশা ভোগলে বলেন, “১৯৯২ সালে পাকিস্তান দেশে ফেরার টিকিটও কেটে ফেলেছিল, ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও একই অবস্থা হয়েছিল, ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তান লিগ পর্বের শেষ চার ম্যাচে জিতে নেট রান রেটে বাদ পড়েছে, ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তান জিম্বাবুয়ের কাছে হেরে শুরু করেও ফাইনালে উঠেছিল শেষ পর্যন্ত”।
বাবর আজম ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের এক নম্বর ব্যাটার, মনে করা হচ্ছিল তিনি হতে যাচ্ছেন বিশ্বকাপের সেরা রান সংগ্রাহকদের একজন সেই তিনি রান করেছেন ২০৭, ৩৪ গড়, ৭৯ স্ট্রাইক রেট।
তিনটি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন তিনি কিন্তু এমন সময়ে আউট হয়েছেন যেন ব্যাটিং ধসের শুরুটা তাকে দিয়েই হয়েছে।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে শাহীন শাহ আফ্রিদি বিশ্বকাপেই বোলারদের মধ্যে এক নম্বরে আছেন এই মুহূর্তে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন।
গতকাল দলে ফিরে রানে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন ফখর জামান, আব্দুল্লাহ শফিক ভালো ব্যাট চালাচ্ছেন।
সব মিলিয়ে মিশ্র এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়েই যাচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল।
তবে বাবর আজমের দলটির এখনও পর্যন্ত সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাকিস্তানের সেমিফাইনালের পথ
যদি নেট রান রেটসহ উঠতে চায় পাকিস্তান সেক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করতে হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড ও আফগানিস্তানের মধ্যে দুটি দলের বেশি যাতে ১২ পয়েন্টে বেশি না পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
অস্ট্রেলিয়া অথবা নিউজিল্যান্ডে যে কোনও একটি দলের পরের তিন ম্যাচেই হারতে হবে।
আফগানিস্তানের অন্তত দুটি এবং শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের অন্তত একটি হারতে হবে।
তবে পাকিস্তান ৮ পয়েন্ট নিয়েও সেমিফাইনালে উঠতে পারে সেক্ষেত্রে অনেক ফলাফল তাদের পক্ষে যেতে হবে।