সূত্র বলেছে, ‘বাংলাদেশে চীনের প্রভাব বাড়ছে; তাছাড়া ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই চায় যে একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসুক। এ কারণে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র একই সঙ্গে আগ্রহী এবং উদ্বিগ্ন।’
সূত্রের এই তথ্যকে গুরুত্ব দেওয়ার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। কারণ শুক্রবার বৈঠকের দিনই ঢাকা থেকে দিল্লির ফ্লাইট ধরেছেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক নয়। ভারতের সঙ্গে সীমানা নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে চীনের। গত ৬ দশকে অন্তত তিন বার সীমানা নিয়ে যুদ্ধে জড়িয়েছে ভারত এবং চীন।
আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের প্রধান দ্বন্দ্ব তাইওয়ান এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকে ঘিরে। বিভিন্ন সময়ে তাইওয়ানকে যুক্তররাষ্ট্রের অস্ত্র ও সামরিক সহায়তা প্রদান নিয়ে তীব্র আপত্তি রয়েছে চীনে। অন্যদিকে সঙ্গে বৈশ্বিক রাজনীতি ও বাণিজ্যে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব গত বেশ কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
চীন সম্পর্কে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি উদ্বেগের কারণ চীনের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোডস ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)। মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপন করতে গত এক যুগ আগে নেওয়া এই প্রকল্পের নেটওয়ার্কে রয়েছে বাংলাদেশও।
সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের স্থানীয় জনগণের মধ্যে চীনের প্রভাব বাড়ছে— এমন এক আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রভাব প্রতিহত করতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবেন বা নেবেন— এমন আস্থাও তারা রাখতে পারছে না।
কারণ ইতোমধ্যেই বিআরআই প্রকল্পের আওতায় চীনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু হলো ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব। ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আর একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে চীনের প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কায় ইতোমধ্যে চীনের শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই চায় না বাংলাদেশও এই প্রভাবের মধ্যে পড়ুক।
‘এ কারণে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দেশটির সঙ্গে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বাড়ানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়েও আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। আপনারা জানেন যে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার বলেছে বাংলাদেশে তারা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় তারা।’