বিরিয়ানি বিক্রেতার নাম কী, জানা যায়নি। তবে নাম যা-ই হোক, জীবনে আর কোনো দিন বিরাট কোহলিকে নিয়ে এমন ‘অদ্ভুত মানত’ তিনি করতে যাবেন বলে মনে হয় না! তা কোহলি যতই তার প্রিয় খেলোয়াড় হোক। এবার তবু পুলিশ ডেকে হাঙ্গামার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। ভবিষ্যতে এমন ঘোষণা দিয়ে এবারের মতো ধরা খেলে হয়তো তার জীবন নিয়েই টানাটানি শুরু হবে!
তা কোহলিকে নিয়ে কী মানত করেছিলেন তিনি? বিরিয়ানি! গত পরশু মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় ভারত ও নিউজিল্যান্ড। তো এই ম্যাচের আগে ভারতের উত্তর প্রদেশের বাহরাইচ জেলার তিকোনিবাগ এলাকার এক বিরিয়ানি বিক্রেতা ঘোষণা দিয়ে বসেন, সেমিফাইনালে কোহলি যত রান করবে, তত শতাংশ কম দামে বিরিয়ানি দেওয়া হবে! তো দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কোহলি করে বসেন সেঞ্চুরি। খেলেন ১১৩ বলে ১১৭ রানের ইনিংস। ১১৭ শতাংশ দাম কমানোর তো সুযোগ নেই। তবে কথামতো ঐ বিরিয়ানি বিক্রেতাকে ১০০ বিরিয়ানির দাম ১০০ শতাংশ কমাতে হয়, মানে বিরিয়ানি বিক্রি করতে হয় বিনা মূল্যে!
তাতেও সমস্যা ছিল না। যতটুকু বিরিয়ানি তিনি রান্না করেছিলেন, সেটুকুই না হয় ফ্রি দিতে হতো। কিন্তু ফ্রিতে বিরিয়ানি দেওয়া হচ্ছে—এই খবর মুহূর্তেই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে এলাকা জুড়ে। ব্যস, মুফতে বিরিয়ানি খেতে এলাকার মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে ঐ দোকানে। প্রথমে লাইন ধরেই বিরিয়ানি দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ভিড় বেড়ে যাওয়ায় লাইন আর লাইন থাকেনি।
প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে কার আগে কে বিরিয়ানি নেবে, তা নিয়ে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, হুলস্থুল কাণ্ড। দোকানের মালিক-কর্মচারীরা মিলেও সামাল দিতে পারছিলেন না। এদিকে বিরিয়ানও ফুরিয়ে যায় দ্রুত। কিন্তু মুফতে বিরিয়ানি খেতে আসা মানুষের ভিড় কমে না। তারা দোকানিকে উচ্চ স্বরে ধমকাতে থাকেন দ্রুত বিরিয়ানি রান্না করার জন্য। বিপদ আঁচ করতে পেরে দোকান মালিক দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেন। তাতেও রক্ষা হচ্ছিল না।
বিরিয়ানি না পাওয়া জনতা আরো বেশি চ্যাঁচামেচি শুরু করে দেয়। মহাবিপদ আঁচ করতে পেরে দোকান মালিক বাধ্য হন পুলিশের সহায়তা নিতে। ডেকে আনেন পুলিশ। তো পুলিশ এসে ফ্রি বিরিয়ানিলোভী জনতাকে সরিয়ে দিলে বিপদ কেটে যায়। হাঁফ ছেড়ে বাঁচা বিরিয়ানির দোকানি বলেন, তিনি বুঝতেই পারেননি বিনা মূলে বিরিয়ানি খেতে এতটা ভিড় জমে যাবে।