আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাতটার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র চাপ ও ক্ষমতাসীন হাসিনা সরকারকে অস্থিতিশীল করার ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টার মধ্যেও বাংলাদেশে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলো।
বাংলাদেশের দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন্ন নির্বাচনে জয়ী হলে পঞ্চমবারের মতো দেশের দায়িত্ব নেবেন।
স্বরাজ্যের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) অন্যান্য পশ্চিমা শক্তিগুলোর তীব্র প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতি ভারতের শক্তিশালী সমর্থনের মধ্যে নির্বাচনের এই ঘোষণা এসেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে বিরোধীদের তীব্র বিক্ষোভ চলছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এরই মধ্যে তফসিল বয়কট করেছে। তারা হুমকি দিয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে না সরলে নির্বাচনে যাবে না। এ সময় বিএনপি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অটল অবস্থান ব্যক্ত করে। বিএনপির এই দাবির সমর্থনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইইউ।
বিএনপি একাধিক নেতাই এখন দুর্নীতির কারণে গৃহবন্দী আছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
উল্লেখ্য, বিএনপির সঙ্গে ইসলামপন্থীদের দৃঢ় সম্পর্ক আছে। যখনই বিএনপি ক্ষমতায় যায়, তখনই তারা বারবার বাংলাদেশে ভারতবিরোধী কার্যকলাপে সমর্থন দিতে থাকে।
১৯৯১ ও ২০০১ সালে ক্ষমতায় এলে বিএনপি শুধু পাকিস্তানের সঙ্গেই সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করেছে এমন না চীনের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক ছিল মধুর।
এছাড়া সেই সময় বিএনপি ভারত-বিরোধী উত্তর-পূর্ব গেরিলা গোষ্ঠীকে সমর্থন দেয়। স্বরাজ্যের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকারকে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ভারত হাসিনা সরকারকে তাদের শক্তিশালী সমর্থন জানিয়ে দিয়েছে এবং পাশে দাঁড়িয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা স্বরাজ্যকে জানিয়েছে, ভারত পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক চিত্র ব্যাখ্যা করেছে। সেই সঙ্গে বিএনপি ও উগ্র ইসলামপন্থী শক্তির মধ্যকার যোগসূত্র বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন।
গত ১০ নভেম্বর ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ‘টু প্লাস টু’ মন্ত্রিপর্যায়ের সংলাপ হয়। সেখানে যোগ দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। সেই সংলাপে ভারত তাদের নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশে নিজেদের অবস্থান আবারও ব্যক্ত করে।
পাশাপাশি ভারত তাদের পশ্চিমা বন্ধুদের আরও বুঝিয়েছে, বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ বুমেরাং হবে। এই ধরনের হস্তক্ষেপ ও চাপের কারণে বাংলাদেশ চীনের কাছে ঘেঁষবে।