খুলনার বটিয়াঘাটার আমজাদ হোসেন হাওলাদারসহ ছয় রাজাকারের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী বৃহস্পতিবার রায় ঘাষণা করা হবে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন একই উপজেলার শুরখালী গ্রামের সহর আলী শেখ, সুন্দর মহল গ্রামের মো. আতিয়ার রহমান শেখ, কিসমত লক্ষ্মীখোলা গ্রামের মো. মোতাসিন বিল্লাহ, বিরাট গ্রামের মো. কামালউদ্দিন গোলদার ও নোয়াইল গ্রামের মো. নজরুল ইসলাম।
চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার এ মামলার রায়ের তারিখ ঠিক করে দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য বিচারক হলেন বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।
২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর এ মামলার তদন্ত শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৮ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। ২০১৭ সালের ৮ আগস্ট প্রসিকিউশনে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে ওই বছরের ১৯ নভেম্বর প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন দাখিল করার পর ১৪ ডিসেম্বর তা আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। তখন পর্যন্ত মামলার সাত আসামির মধ্যে মো. নজরুল ইসলাম পলাতক ছিলেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি করেন প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আল ফয়সাল আলী, আব্দুস সাত্তার পালোয়ান ও রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম। ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ হওয়ার পর ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগ আনা হয়।
প্রসিকিউশনের ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জন এ মামরায় সাক্ষ্য দেন। সাক্ষীদের জেরার পর উভয় পক্ষের আইনি যুক্ততর্ক উপস্থাপন শেষে গত ২২ মে মামলাটি রায়ের অপেক্ষায় রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউটর মুন্নি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আজ এ মামলাটি কার্যতালিকায় ওঠে। এরপর ট্রাইব্যুনাল ২৮ জুলাই রায় ঘোষণা করবেন বলে তারিখ দেন। ‘
এ মামলার সাত আসামির মধ্যে নজরুল ইসলাম বাদে ছয় আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে বিচার চলা অবস্থায় আসামি মোজাহার আলী শেখ মারা যান বলে জানান এই প্রসিকিউটর।
আসামি আমজাদ কনভেনশন মুসলিম লীগের কর্মী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি স্থানীয় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। আসামি মো. মোতাসিন বিল্লাহ জামায়াতে ইসলামীর অনুসারী। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি স্থানীয় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। বাকি আসামিরাও রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিলেন।