‘পাবনা-৩ আসনে মকবুল চাচা ছাড়া কেউ ভোট করতে পারবে না’ বলে হুমকি দিয়েছেন পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ। তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) বিকালে পাবনার চাটমোহর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে নৌকার প্রার্থী পাবনা-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মো. মকবুল হোসেনের পক্ষে এক পথসভায় এ হুমকি দেন তিনি। এর আগে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে চাটমোহর পৌর সদরে নৌকার পক্ষে একটি মিছিল করা হয়। মিছিল শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে পথসভায় বক্তব্য দেন মিজানুর রহমান সবুজ।
এ সময় বক্তব্যে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সবুজ আরও বলেন, ‘যারা নৌকার বিপক্ষে অবস্থান করবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলাম। কোনো ছাত্রনেতা যদি নৌকার বিপক্ষে অবস্থান করে তাহলে আমরা তাকে ছাত্রলীগে থাকতে দেবো না। শুধু ছাত্রলীগ কেন, ভবিষ্যতে যুবলীগ, আওয়ামী লীগ কোনো সংগঠনে আমরা জায়গা দেবো না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বলেন, ‘পাবনা-৩ আসনে নৌকার পক্ষে আনন্দ মিছিল করেছি। সেখানে পথসভায় আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী যারা তাদের উদ্দেশে এসব বলা হয়েছে। কারণ তারা বিদ্রোহী প্রার্থী। আর তাদের বিষয়ে দলও পরিষ্কার করে দিয়েছে। আমিও সেটি তুলে ধরেছি।’
নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগে সভা, সমাবেশ বা মিছিল করা ও এমন হুমকিমুলক বক্তব্য দিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন নয় বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পাবনা-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা আব্দুল হামিদ মাস্টার বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগেই এমনভাবে প্রকাশ্যে মিছিল ও পথসভা করে বক্তব্য দেওয়া, অন্যান্য প্রার্থীদের উদ্দেশে হুমকি দেওয়া, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন। এটি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের অন্তরায়। এ বিষয়ে আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করবো।’
পথসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির খান। উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হিমুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন এবং উপস্থিত ছিলেন-চাটমোহর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন মিয়া, ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমপিপুত্র ইবনুল হাসান শাকিল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মির্জা, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আ. আলীম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজিব কুমার বিশ্বাস রাজু,উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মজনু খা, সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমানসহ উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়কসহ অন্যরা।
এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হালিমের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’