আইরিনের বাড়ি বগুড়া সদর উপজেলা শাখারিয়ার পল্লিমঙ্গল এলাকায়।বাবা ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান।শৈশবে কথা বলতে না পারায় স্থান হয়নি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।অভাব অনটনের সংসারে চিকিৎসা মিলেছে সাধ্যের মধ্যে।অবশেষে আইরিনের স্থান হয় মূক ও বধির বিদ্যালয়ে।আইরিন এখন বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।সেই প্রথম শ্রেণি থেকেই আছে আবাসিক শিক্ষার্থী হয়ে।
আরেকজন জেমি খাতুন।তার মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।মূক ও বধির বিদ্যালয়ের প্রায় সকলেই নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে আসা।অনেকের পরিবার এখানে দিয়ে যাওয়ার পর আর খোঁজ রাখে না।কাজেই এই শিশুদের হাসি আর কান্নাও কেউ বোঝে না।কারো আবার মা-বাবা নেই।তেমনি সালমা,আইরিন,মিল্লাত,হামিদুর,অনিক,আল-আমিন,তরিকুল,তন্ময়।তারা মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারেনি।কারণ জন্মগতভাবেই তারা বাকপ্রতিবন্ধী।এরা সবাই বগুড়া মূক ও বধির বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এখানকার শতাধিক শিশু নীরবে বছরের পর বছর ধরে দাঁতের যন্ত্রণায় ভুগছিল।বাকপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের দাঁতের যত্ন শেখাতে শুভসংঘের বগুরা জেলা শাখার সকল বন্ধুরা হাজির হন।গতকাল মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) সাড়ে ১১টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলা কলোনির মূক ও বধির বিদ্যালয়ে শুভসংঘের বগুড়া জেলা শাখার বন্ধুদের নিয়ে উপস্থিতব হন সভাপতি ডা.সিরাজুল হক ফাইন।তিনি এসব শিক্ষার্থীদের সঠিক নিয়মে দাঁতের যত্ন নিতে শিখিয়েছেন,ব্রাশ করা শিখিয়েছেন।
ডা.সিরাজুল হক ফাইন শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের দাঁতের সমস্যাগুলোর তাৎক্ষণিক সমাধান দেন এবং ঘোষণা দেন যে,প্রতিমাসে একদিন তিনি নিজ চেম্বারে প্রতিবন্ধী শিশুদের বিনামূল্যে দাঁতের সমস্যার চিকিৎসা দেবেন। শুভসংঘের পক্ষ থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সেনসোডাইন ও প্যারোডনট্যাক্স উপহার দেওয়া হয়।
মূক ও বধির বিদ্যালয়ের সহকারী সিনিয়র শিক্ষক মো.আবু সাইদ শিক্ষার্থীদের সকল বিষয় বুঝে নিতে সহযোগিতা করেন।
এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন মূক ও বধির বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মো.আতাউর রহমান।সেখানে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি ডা.শফিক আমিন কাজল, শুভসংঘের বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শিশির মোস্তাফিজ,সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জনি,জিএসকে বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রতিনিধি মো.শামিম রেজা,বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো.আমান উল্লাহ,সাহিন সুলতানা,রাকিবা সুলতানা,শুভার্থী রুমানা ইয়াসমিন রুমি,আল-আদল আপন,কামরুন্নাহার,আব্দুর রহিম প্রমুখ।
শুভকাজে সবার পাশে থেকে শুভসংঘ আগামী দিনেও এরকম কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়।