আওয়ামী লীগের সাথে জাতীয় পার্টির (জাপা) আসন সমঝোতার বিষয়টি ঝুলে গেছে। কয়েক দফায় দুই পক্ষের বৈঠকেও গতকাল শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত সমঝোতা চূড়ান্ত হয়নি। শেষ পর্যন্ত সমঝোতা না হলে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আজ রবিবার শেষদিনে নতুন সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে পারে জাপা।
সর্বশেষ শুক্রবার আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে বৈঠকে জাপাকে ২৬টি আসনে ছাড় দিতো রাজি হয় জাপা। তবে সেই ২৬ জনের তালিকায় জাপার কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নাম নেই। যার কারণে জাপা ২৬ জনের তালিকা প্রত্যাখ্যান করেছে।
এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাপার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের গতকাল শনিবার দুপুরে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জাপাকে টেলিফোনে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, আসন পরিবর্তন ও বাড়ানো সম্ভব নয়।
এরপর দুপুর দুইটা থেকে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ দলটির কেন্দ্রীয় প্রায় সকল নেতা এবং বর্তমান এমপিরা গুলশানে পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাসায় বৈঠকে বসেন। বৈঠকটি গভীর রাত পর্যন্ত চলে।
জানা গেছে, এই বৈঠক থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ফোন করে জাপা মহাসচিব চুন্নু বলেন, ২৬ জনের তালিকায় দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নাম না থাকায় তা মানতে পারছি না। পরে জাপার প্রসিডিয়াম সদস্য সোস্তফা আল মাহমুদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা মির্জা আজমের কাছে ৪২ জনের তালিকা পাঠানো হয়। তালিকা পেয়ে ওবায়দুল কাদের তাদের জানান, তিনি তার দলীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলে জানাবেন । রাত একটায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি জাপাকে কিছু জানানিন। তখনও জাপার নেতারা সবাই বারিস্টার আনিসের বাসিয় অপেক্ষমান ছিলেন।
জাপা নেতারা জানান, সমঝোতা না হলে জাপার প্রার্থীরা আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে পারেন। সেজন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরী করে রাখা হয়েছে।
সমঝোতা ঝুলে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জাপা নেতারা ইত্তেফাককে জানান, আওয়ামী লীগ নিজদের পছন্দমতো তালিকা করেছে। যেখানে নৌকার প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে, সেগুলোকে ছাড় হিসেবে দেখানো হয়েছে। অথচ জাপা যাদের আসনে ছাড় চেয়েছে, সেসবের বেশিরভাগই বাদ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ২৬ জনের তালিকায় এমন প্রার্থীদের নাম রয়েছে, যাদের নাম জাপা থেকে দেওয়া হয়নি।
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, সম্মানজনক আসনে এবং দলের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী আমন ছাড় দেওয়া না হলে জাপা শেষ পর্যন্ত নির্বাচন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেবে।