গাজায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ‘অপরাধ’ সংঘটিত করতে থাকলে ভূমধ্যসাগর বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর একজন কমান্ডার। তবে কী ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে ভূমধ্যসাগর বন্ধ করে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি। শনিবার ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, লোহিতসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলায় হুতিদের সঙ্গে ইরানও জড়িত।
ইসরাইলের বিরুদ্ধে গত ৭ অক্টোবর থেকে যুদ্ধ চালিয়ে আসছে ইরান-সমর্থিত ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। গাজার ক্ষমতাসীন এই গোষ্ঠী উপত্যকায় ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলমান হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে গাজায় ২০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। গাজায় ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা নাকদি বলেছেন, ‘শিগিগরই ভূমধ্যসাগর, জিব্রাল্টার প্রণালি এবং অন্যান্য জলপথ বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা গত মাসে গাজায় ইসরাইলের হামলার প্রতিশোধে লোহিতসাগর দিয়ে চলাচলকারী ইসরাইলি সব বাণিজ্যিক জাহাজে হামলার হুমকি দিয়েছে। এমনকি বেশ কিছু জাহাজে হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। হুতিদের ক্রমবর্ধমান হামলার মুখে বিশ্বের প্রধান প্রধান শিপিং কোম্পানিগুলো তাদের জাহাজ পরিচালনার রুট পালটাতে বাধ্য হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সি নাকদির বরাত দিয়ে বলেছে, ‘গতকাল পারস্য উপসাগর এবং হরমুজ প্রণালি তাদের জন্য (ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র) দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছিল। আজ তারা আটকা পড়েছেন… লোহিত সাগরে।’
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাণিজ্যিক জাহাজে হামলায় হুতিদের সঙ্গে ইরান জড়িত। শুক্রবার হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠীটিকে অস্ত্র ও ট্যাকটিক্যাল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে সাহায্য করছে ইরান। হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা জানি ইরান লোহিতসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের বিরুদ্ধে অভিযানের পরিকল্পনায় গভীরভাবে জড়িত। তিনি বলেন, এটি ইরানের দীর্ঘমেয়াদি সমর্থন এবং এ অঞ্চলে হুতিদের অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডের উত্সাহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
গাজা থেকে শত শত মাইল দূরে অবস্থিত সুয়েজ খাল। এই খালের মাধ্যমেই লোহিতসাগর দিয়ে ভূমধ্যসাগরের দিকে জাহাজ চলাচল করে, যা দূরত্ব কমিয়েছে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে। কিন্তু ইসরাইল ও হামাসের সংঘাতে নতুন সংকট তৈরি হয়েছে সুয়েজ খালে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা লোহিতসাগরে বিভিন্ন জাহাজে হামলা চালাচ্ছে। বিশেষ করে ইসরাইলগামী জাহাজ লক্ষ্য করে।