আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে এবার প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রর নাম জড়াল কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ভারতের দিল্লির লাগোয়া হরিয়ানার ফরিদাবাদে কিছু কৃষিজমি কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে মামলার চার্জশিটে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কার নাম ইডি উল্লেখ করেছে।এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইডির কোনো চার্জশিটে এই প্রথম আর্থিক দুর্নীতি মামলায় প্রিয়াঙ্কার নাম উল্লেখ করা হলো। চার্জশিটে বলা হয়েছে, ২০০৬ সালে হরিয়ানায় এক এজেন্ট এইচ এল পাহওয়ার কাছ থেকে প্রিয়াঙ্কা পাঁচ একর জমি ও বাড়ি কিনেছিলেন। চার বছর পর ২০১০ সালে সেই জমিই আবার ওই এজেন্টের কাছে তিনি বেচে দেন।
তবে ইডি সূত্রে জানা গেছে, দুজনের নাম চার্জশিটে থাকলেও কাউকেই অভিযুক্ত বলে চিহ্নিত করা হয়নি। মূল অভিযুক্তের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে তাদের নাম এসেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
জমি কেলেঙ্কারি মামলায় ইডি-র চার্জশিটে দুই মূল অভিযুক্ত সিসি থাম্পি এবং সুমিত চাড্ডা। সিসি থাম্পি একজন এনআরআই ব্যবসায়ী। অন্যদিকে সুমিত ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। যুক্তরাজ্যেই থাকেন তিনি।
সঞ্জয় ভান্ডারী নামে এক জনৈক অস্ত্র বিক্রেতাকে অবৈধ লেনদেনে এই দুই ব্যক্তি সাহায্য করেছিলেন বলে ইডি-র চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে।
এর আগে প্রিয়াঙ্কা এবং রবার্টকে আলাদা আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। প্রিয়াঙ্কার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৬ সালে দিল্লি লাগোয়া ফরিদাবাদে একটি জমি কিনেছিলেন তিনি। জমিটি কিনেছিলেন এইচএল পাওয়া নামক এক জমির দালালের কাছ থেকে। চার বছর পর ২০১০ সালে সেই জমিটি পাওয়াকেই ফের বিক্রি করে দেন তিনি। একইভাবে ফরিদাবাদে একটি বাড়িও কিনেছিলেন প্রিয়াঙ্কা। ২০১০ সালে তা আবার পাওয়াকে বিক্রি করে দেন তিনি।
রবার্টও একই কাজ করেছেন। ২০০৫ এবং ‘০৬ সালের মধ্যে পাওয়ার কাছ থেকে আমিপুরে ৪০ দশমিক আট একর জমি কিনেছিলেন বঢরা। ২০১০ সালে পাওয়াকেই সেই জমি বিক্রি করে দেন তিনি। থাম্পি পাওয়ার সঙ্গে একই রকমের একটি করেন ওই সময়েই। জমির পরিমাণ ৪৮৬ একর। এই পাওয়ার সূত্র ধরেই ইডি প্রিয়াঙ্কা এবং রবার্টকে থাম্পির সঙ্গে যুক্তকরেছে। ইডি-র বক্তব্য, থাম্পির সঙ্গে যোগসূত্র ছিল বঢরা দম্পতির।
প্রিয়াঙ্কা বা রবার্ট এখনো পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। এই প্রথম তাদের নাম কোনো চার্জশিটে উঠল। দিল্লির কংগ্রেস নেতারাও এখনো পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে হিমাচলপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস প্রধান এর পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেছেন, লোকসভা নির্বাচনের এরকম অনেক কিছুই হবে।
বস্তুত, এর আগে কংগ্রেস সহ অবিজেপি একাধিক দল অভিযোগ করেছে যে, বিজেপি সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করছে। রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সকলকেই ইডি-সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। এদিনের ঘটনাও তেমনই আরেক দৃষ্টান্ত বলে দাবি করেছেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।