টি-টোয়েন্টি থেকে আগেই অবসর নিয়েছেন তামিম ইকবাল-মাশরাফি বিন মর্তুজা। ছুটিতে আছেন সাকিব আল হাসান। আর মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে দেওয়া হয়েছে বিশ্রাম। নেতৃত্ব ভার দেওয়া হয়েছে নুরুল হাসান সোহানকে। অর্থাৎ সিনিয়রদের ক্রিকেটার ছাড়া নতুন বাংলাদেশের পথচলা শুরু হয়েছে জিম্বাবুয়ে সফরের টি-টোয়েন্টি সিরিজে। সেই পথের শুরুতে বড় ধাক্কা খেল তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হার দিয়ে মিশন শুরু হয়েছে সোহানদের।
নতুন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্ব শুরুটা হলো হতাশার হারে। ব্যাট হাতে নিজে লড়াই করলেও নেতৃত্বে অনভিজ্ঞতার ছাপ ছিল স্পষ্ট। জিম্বাবুয়ের ২০৬ রানের বড় লক্ষ্য টপকানোর চ্যালেঞ্জে নেমে বাংলাদেশ তোলে ৬ উইকেটে ১৮৮ রান। শেষে মারকুটে ব্যাটিং উপহার দিয়ে হারের ব্যবধান ছোট করেন সোহান।
১২ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩২ রান। ক্রিজে আছেন সোহান-মোসাদ্দেক। রানের ব্যবধান আরো বেশি থাকলেও সোহান ঝড়ে কিছুটা কমে। তিনি ২০ বলে ৩৬ রান করে ক্রিজে আছেন। এটি টি-টোয়েন্টিতে তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। এর আগে ছিল সর্বোচ্চ ৩৩ রান।
শনিবার (৩০ জুলাই) হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টাইগারদের ১৭ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে (১-০) এগিয়ে রইল জিম্বাবুয়ে। লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত ও সোহান ছাড়া বাকিরা প্রয়োজনের দাবি মেটাতে পারেননি। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ আজ একই মাঠে।
সোহান ২৬ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন। চারটি ছয় ও এক চারে সাজান ইনিংস। লিটন ১৯ বলে করেন ৩২ রান। শান্ত ২৫ বলে করেন ৩৭ রান। শুরুতে বোলিংয়ে খাপছাড়া মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ দলকে। সঠিক লেন্থে বলই ফেলতে পারছিলেন না তাসকিন-শরিফুলরা। সুযোগের ফায়দা নিয়ে রানের পাহাড় গড়েছে জিম্বাবুয়ে। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে স্বাগতিকরা প্রথমবার দেখে দুইশর মুখ।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২০৫ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। মাত্র ২৬ বলে ৬৫ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন সিকান্দার রাজা। মারেন সাতটি চার ও চারটি ছয়।
ওয়েসলি মাধেভেরে ৪৬ বলে ৬৭ রান করার পর চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন ইনিংসের শেষ ওভারে। সিন উইলিয়ামস করেন ১৯ বলে ৩৩ রান। দলের রান যখন ৯৯ তখন মুস্তাফিজের দ্বিতীয় শিকার হন এ ব্যাটার।
তারপর মাধেভেরে ও রাজা চালিয়ে যান তাণ্ডব। শেষ ৪৫ বলে ১০৫ রান তোলেন। তিন পেসারই ৪ ওভারে চল্লিশের বেশি রান দেন। শরিফুল তাসকিনকে ছাড়িয়ে রান দেওয়ায় ফিফটি পূর্ণ করেন মুস্তাফিজ। যদিও এ বাঁহাতি পেসার দুটি উইকেটও নেন। স্পিনাররা তুলনামূলক ভালো করেছেন। মোসাদ্দেক হোসেন ৩ ওভারে ২১ রান নেন একটি উইকেট। নাসুম আহমেদ ৪ ওভারে দেন ৩৮ রান। আফিফ হোসেন এক ওভারে দেন ৬ রান। স্পিনাররা ভালো করায় প্রশ্ন তোলাই যায় একাদশে কেন পেসার কমিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ কিংবা শেখ মেহেদি হাসানকে সুযোগ দেওয়া হলো না! বোলার ব্যবহারে নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বুদ্ধিমত্তা দেখাতে পারেননি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে : ২০ ওভার ২০৫/৩ (চাকাভা ৮, আরভিন ২১, মাধেভেরে ৬৭ (আহত অবসর), উইলিয়ামস ৩৩, রাজা ৬৫*, বার্ল ০*; তাসকিন ৪২/০, নাসুম ৩৮/০, মুস্তাফিজ ৫০/২, মোসাদ্দেক ২১/১, শরিফুল ৪৫/০, আফিফ ৬/০)
বাংলাদেশ : ২০ ওভার ১৮৮/৬ (মুনিম ৪, লিটন ৩২, এনামুল ২৬, শান্ত ৩৭, আফিফ ১০, সোহান ৪২*, মোসাদ্দেক ১৩, নাসুম ০*; এনগারাভা ৪৩/১. মাসাকাদজা ২৩/১, চিভাঙ্গা ২৮/০, উইলিয়ামস ৭/০, রাজা ৩০/১, লুক ৩৪/২, মাধেভেরে ১২/০)।