মোসাদ্দেক হোসেনের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে জিম্বাবুয়েকে স্বল্প রানে রুখে দিয়ে প্রথম ইনিংস শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত স্বাগতিকদের দেওয়া ১৩৬ রানের লক্ষ্য ১৫ বল হাতে রেখে টপকে গেল টাইগাররা। ৭ উইকেটের জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরেছে সফরকারীরা।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট বিচারে ১৩৬ রানের লক্ষ্যকে মামুলিই বলা চলে। এই রান তাড়া করতে নেমে লিটন দাসের ব্যাটে উড়ন্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। প্রথম ৬ ওভার তথা পাওয়ারপ্লে থেকে ৫৩ রান তোলে সফরকারীরা।
বাংলাদেশ ইনিংসের পঞ্চম ওভারে রিচার্ড এনগারাভার বলে তরুণ ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার ব্যক্তিগত মাত্র ৭ রানে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৪ রানের পর এই ম্যাচেও দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করতে ব্যর্থ হলেন তিনি।
মুনিম দ্রুত ফিরে গেলেও এনামুল হক বিজয়কে সঙ্গে নিয়ে ঝড়ো গতিতে রান তোলা অব্যাহত রাখেন লিটন। নবম ওভারের শেষ বলে উইলিয়ামসের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ফেরার আগে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৩৩ বলে ৫৬ রান করেন তিনি।
লিটন ফেরার ৩ বলের মাথায় সাজঘরের পথ ধরেন বিজয়ও। ১৫ বলে ১৬ রান করে সিকান্দার রাজার বলে আউট হন তিনি।
তিন বলের ব্যবধানে দুই উইকেট হারালেও চতুর্থ উইকেট জুটিতে আফিফ হোসেন (৩০*) এবং নাজমুল হোসেন শান্তর (১৯*) ৪৮ বলে ৫৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে ১৩ ম্যাচে মাত্র ১ জয় ছিল টাইগারদের। নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম ফরম্যাটে জয়ের ধারায় ফিরল বাংলাদেশ।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ের ইনিংসের শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত মোসাদ্দেকের। প্রথমে ফেরান রেজিস চাকাভাকে। রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন এই ওপেনার। ওভারের শেষ বলে আউটসাইড অফের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে কাভার পয়েন্টে মেহেদীর হাতে ক্যাচ দেন মাধেভেরে। আগের ম্যাচে ৬৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছিলেন এই ব্যাটসম্যান, এবার ফিরলেন মাত্র ৪ রানে।
মোসাদ্দেকের ঘূর্ণিতে দিশেহারা জিম্বাবুয়ে তৃতীয় উইকেট হারায় ইনিংসের তৃতীয় ওভারে, এবার শিকার স্বাগতিক অধিনায়ক ক্রেইগ এরভিন। স্লিপে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে তিনি সাজঘরে ফেরেন ৪ বলে ১ রান করে। পরের দুই উইকেটও মোসাদ্দেকের দখলে। নিজের তৃতীয় ওভারে উইলিয়ামসের ফিরতি ক্যাচ নেন। ৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটসম্যান।
নিজের কোটার চতুর্থ ওভারে আউট করেন মিল্টনকে। হাঁটু গেঁড়ে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে হাসান মাহমুদের হাতে ধরা পড়ে এই ব্যাটসম্যান ফেরেন ৮ বলে ৩ রান করে। ৭ ওভারে ৩২ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে জিম্বাবুয়ে।
সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্ল। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করে বার্ল করেন ৩১ বলে ৩২ রান। তাকে হাসান ফেরালে ভাঙে ৬৫ বলে ৮০ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি।
বার্ল আউট হওয়ার কিছুক্ষণ পর ফেরেন রাজাও। তাকে শিকার বানান মুস্তাফিজ। ৫৩ বলে ৬২ রানের ইনিংসটি রাজা সাজান ৪টি চার ও ২টি ছয়ের মারে। শেষদিকে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ৬ এবং লুক জংউইয়ের ৫ বলে ১০ রানের সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানের পুঁজি পায় জিম্বাবুয়ে। ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়ে ক্যারিয়ার সেরা ৫ উইকেট নেন মোসাদ্দেক।