ভয়াবহ বন্যা ও ভারিবর্ষণে বিধ্বস্ত পাকিস্তান। মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩শ’২০ জনে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বালুচিস্তান প্রদেশেই মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১শ’২৭ জনের। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। অন্যদিকে, ইরানে প্রবল বর্ষণে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বছরের বেশিরভাগ সময়ের খরাপ্রবণ এলাকাগুলোও প্লাবিত। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন পরিবেশবিদরা।
পাকিস্তানের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে সাহায্যের আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী শরীফ। মৃতদের পরিবারের জন্য বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেন তিনি। বন্যায় গৃহহীনদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সেখানেই সংবাদ মাধ্যমে তিনি জানান, প্রায় ১৩ হাজার ঘর সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে গিয়েছে। বিগত পাঁচ সপ্তাহের বৃষ্টিতে সিন্ধ প্রদেশেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। করাচি শহরে মারা গিয়েছেন প্রায় ৭০ জন। পাকিস্তানের দুর্ঘটনা ও বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার রিপোর্ট অনু্যায়ী পাঞ্জাব প্রদেশে মৃতের সংখ্যা অন্তত ৫০ এবং দুর্গম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে মারা গিয়েছেন কমপক্ষে ৬০ জন।
সরকার ইতিমধ্যেই প্রত্যেক বন্যাকবলিত পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা সাহায্যের ঘোষণা করেছে। পাকিস্তানের বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল নাসির আহমেদের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত মোট ১২৭ জন মারা গিয়েছে। বালুচিস্তান প্রদেশের নোশকি, লাসবেলা, ছাগি এবং ঝোব জেলায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। ৪৬ জন শিশু ও ৩২ জন মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকাজে নিযুক্ত হয়েছে পাকিস্তানের সেনাদল-ও। এখনও পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে রয়েছেন।
একই অবস্থা ইরানেও। কয়েক সপ্তাহের প্রবল বৃষ্টির দাপটে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেখানকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এখনও পর্যন্ত মোট ৭০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বাড়ি ভেঙেছে প্রায় ২০ হাজার মানুষের। নিখোঁজের সংখ্যা প্রায় ৪৫। প্রায় ২০ টি প্রদেশ বিশেষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইরানে। একইসঙ্গে জলের তলায় বহু রাস্তা ও এয়ারপোর্ট। সেখানে ঘুরতে আসা বহু পর্যটক বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন বলেই খবর পাওয়া যাচ্ছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে রেল পরিষেবাও গত কয়েক সপ্তাহে ভীষণ ভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।