বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস রবিবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের একটি নতুন তরঙ্গ দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের দ্রুত-ট্র্যাক তৃতীয়-দেশে পুনর্বাসনের আহ্বান জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের শাসক জান্তা এবং দেশটির বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ থেকে আকৃষ্ট একটি শক্তিশালী জাতিগত মিলিশিয়া আরাকান আর্মির মধ্যে লড়াই তীব্র হওয়ায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রায় ৮০০০ রোহিঙ্গা মুসলিম সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
নতুন আগমনের ফলে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় ইতিমধ্যেই জনাকীর্ণ শিবিরে বসবাসকারী ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী যোগ হয়েছে, যাদের অধিকাংশই ২০১৭ সালে মিয়ানমারে সামরিক নেতৃত্বাধীন দমন অভিযান থেকে পালিয়ে এসেছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বদেশে ফিরে যাওয়ার আশা নেই, যেখানে তারা মূলত নাগরিকত্ব এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (IOM) এর সাথে একটি বৈঠকের সময় পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানানো হয়েছিল, যেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস বলেছেন, “পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সহজ, নিয়মিত এবং মসৃণ হওয়া উচিত।”
বাংলাদেশে আইওএম-এর প্রধান আবদুসাত্তর এসোয়েভ বলেছেন, ১২ বছরের ব্যবধানে ২০২২ সালে তৃতীয় দেশে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন আবার শুরু হয়েছিল, তবে এই বছর কেবল গতি পেয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটন হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে, তবে প্রক্রিয়াটি এখনও ত্বরান্বিত হয়নি।
২০১৭ সালের মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্বাধীন অভিযানের পর থেকে সহিংসতার সাম্প্রতিক বৃদ্ধি রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে, যেটিকে জাতিসংঘ গণহত্যার অভিপ্রায় হিসেবে বর্ণনা করেছে।
বাংলাদেশের ডি ফ্যাক্টো পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন গত মাসে রয়টার্সকে বলেছিলেন বাংলাদেশ আরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী গ্রহণ করতে পারে না এবং ভারত ও অন্যান্য দেশকে সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা আরও বেশি করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা বন্ধ করতে আরাকান আর্মির ওপর আরো চাপ প্রয়োগ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।