সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, তার দেশ এখানকার কোনো নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না।
বুধবার (১০ আগস্ট) রাজনৈতিক নেতাদের জন্য ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম পলিটিক্স ম্যাটারস-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ‘পলিটিক্স ম্যাটারস’ প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শামিম হায়দার পাটোয়ারী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও বক্তব্য দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে না। দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আগ্রহ নাই। তবে জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সমথর্ন আছে।
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন এর থেকে ভালো কোনো পন্থা হতে পারে না। এটা কঠিন কাজ কিন্তু সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটা সুসম্পন্ন করা যায়। এক্ষেত্রে কোনো একটি দল তাদের কর্তব্য সঠিকভাবে পালনে ব্যর্থ হলে পুরো আয়োজন পণ্ড হয়ে যেতে পারে।
‘পলিটিক্যাল ম্যাটারস’ রাজনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলেও মনে করেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
জাতীয় পার্টির শামিম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ৫০ বছরে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ অর্জনে কোনো দলই অনুশীলন ও চর্চার পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। তরুণরা এখন রাজনীতি বিমুখ হয়ে পড়ছে। ভোট দিতেও অনাগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে একটি ভালো নির্বাচন ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। আমরা ব্যর্থ হলে নতুন প্রজন্ম মাফ করবে না। সব দলের পারস্পরিক আলাপ আলোচনা, শ্রদ্ধাবোধ একটি সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দিতে পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সাধারণ মানুষ রাজনীতিতে সম্পৃক্ত না হলে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আসবে না। ডিসিপ্লিনড রাজনীতি শেখার কোনো সুযোগ নেই এদেশে। যোগাযোগ শেখার যে অভাব রয়েছে, তার প্রতিফলন মাঠে সব সবখানেই দৃশ্যমান।
তিনি আরও বলেন, যদি বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে না আসে, জনগণ ভোট দিতে না পারে, অংশগ্রহণমূলক ভোট না হয়, জবাবদিহিতা না হয়, তাহলে যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি কোনো দিনই তা অর্জিত হবে না। সকল রাজনৈতিক দলকে সমানভাবে মাঠে থাকার সুযোগ দিতে হবে। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার পালাবদলের ধারা তৈরি করতে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নির্বাচন, আইনের শাসন প্রশ্নে জনগণের চিন্তার প্রতিফলন না হলে যারা একে কুক্ষিগত করছে, তাদের জনগণ ক্ষমা করবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, রাজনীতি হলো একটা ব্রত। রাজনীতির কর্মীরা সেটা জানে না। কারণ, তাদের সেভাবে তৈরি করা হয়নি। মানুষের মানবিকতা, মমত্ববোধ কমছে। একজন রাজনৈতিক কর্মীর দ্বায়িত্ব হলো দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে ভাবা। মানবিকতা না থাকলে কোনো উন্নয়ন টেকসই হয় না।
রাজনৈতিক কর্মীরাই এগিয়ে নেবে এ সমাজকে। গণতান্ত্রিক সরকারই রাষ্ট্র চালাচ্ছে। অস্ত্র উঁচিয়ে যখন কোনো দল রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে, তখন গণতন্ত্র আসে না। ৫০ বছরের ইতিহাসে এ দেশে এটাই দেখা যাচ্ছে। নির্বাচন বর্জনের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন আগামী নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশ নেবে, একটি গণতান্ত্রিক সরকার পাবে এদেশের মানুষ।