আজ আমি ক্লান্ত দেহে
তোমার কাছে ফিরব মা
সারারাত শুনব, সেই রাজপুত্রের গল্প
কখনো যে হারতে শেখেনি,
সিন্ধু থেকে পদ্মা
অযোধ্যার কোন প্রাচীন পুরী থেকে
আজ তোমার এই ছায়াসুনিবিড় কুটিরে
যার পড়েছে ছায়া…
বুলেটের আঘাতে ছিন্ন
আমার এই দেহটাকে
আজ পরম স্নেহে কোলে তুলে নেবে তুমি
দূর্ভয়কে জয় করবার সে তীব্র বাসনায়
বেহুলার নূপুর চমকিত করেছিলো ইন্দ্রপুরী
তেমনই ঝংকার তুলেছিলো আজ আমাদের কন্ঠ
আজ আমারই মত আরো অনেকে
ফিরে গেছে তাদের মায়ের কোলে, শতছিন্ন দেহে
বারুদের পোড়া গন্ধ, লাশের স্তূপ, রক্তস্রোত
সত্যকে ঢেকে দেবার কালো পর্দা ছিড়ে
আজ আমরা ফিরে এসেছি…
খালি হাতে নয়
এসেছি এমন এক শক্তি নিয়ে,
যা অবিনশ্বর…
জানো, বুলেটটা যখন আমার
হৃৎপিন্ড ফুঁড়ে বেরিয়ে গেলো,
আমি তখনও দেখেছি,
আকাশে প্রচন্ড শক্তি নিয়ে জ্বলছে সূর্য……
মা. আজ আমার এই নোংরা শার্টটাতে
তুমি শুধু কলমের দাগ, ঘামের গন্ধ
দুটাকার নোট কিংবা কোন চিরকুটা পাবেনা
বারুদের গল্প পাবে,
ফুঁড়ে দেয়া বুলেটের দাগ পাবে
আর পাবে রক্ত, কঠিন লাল রক্ত
সে রক্ত পাবে পলাশের গায়ে, কৃষ্ণচূড়ায়,
নতুন সূর্যে,
আজ আমি তোমার গল্পের সেই রাজপুত্র হয়েছি,
যে নির্ভীক, বিজয়ই যার একমাত্র গন্তব্য..
রাক্ষসপুরীর কালো ছায়াকে
যে তলোয়ারের আঘাতে করেছে কালি ফালি..
কেন জান মা?
শুধু তোমায় ‘মা’ ডাকব বলে
তাই আমি ফেব্রুয়ারীর পলাশ হয়ে।
দেখো মা, তোমারই দ্বারের পাশে ফুটেছি।