রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে বলেছেন, পারমাণবিক দুর্ঘটনা ইউরোপেও ঘটতে পারে। ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়ার পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে সেনা সমাবেশ ঘটিয়ে রাশিয়া পারমাণবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে কিয়েভের মিত্র দেশগুলো। এর জের ধরেই তাদের উদ্দেশ্যে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিলেন সাবেক এই রুশ প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেন বরাবরই অভিযোগ করে আসছে রাশিয়া এমন অবস্থান থেকে শহরগুলোর ওপর গোলাবর্ষণ করছে সেই দিকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর পালটা গুলি চালানোর ঝুঁকি নেওয়া সম্ভব নয়। আর রাশিয়া বলছে ইউক্রেন নিজেদের শহরে গোলাবর্ষণ করে তাদের ওপর দায় চাপাচ্ছে। মস্কোর দাবি ইউরোপের বৃহত্তম ঐ বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন।
রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ শুক্রবার নিজের টেলিগ্রাফ চ্যানেলে লেখেন, তারা (কিয়েভ এবং তার মিত্ররা) বলছে এটা রাশিয়ার কাজ। এটি স্পষ্টতই শতভাগ বাজে কথা, এমনকি বোকা রুসোফোবিক মানুষের ক্ষেত্রেও। রাশিয়ার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট আরো লেখেন, ভুলে গেলে চলবে না ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে এবং সেখানেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জাতিসংঘের পারমাণবিক প্রধান বৃহস্পতিবার সতর্ক করে বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশে ‘সামরিক কর্মকাণ্ড’ থেকে মারাত্মক পরিণতি ঘটে যেতে পারে। আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি কমিশনের মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি অবিলম্বে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে পারমাণবিক বিশেষজ্ঞদের যাওয়ার সুযোগ দিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতি আহ্বান জানান।
কিয়েভ এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ঐ এলাকা সামরিকভাবে নিষ্ক্রিয় রাখার তাগিদ দিয়ে আসছে। এছাড়া শিল্পোন্নত সাত দেশের জোট জি৭ ঐ কেন্দ্রটি ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তবে রাশিয়ার সিনিয়র আইনপ্রণেতা লিওনি স্লাটস্কি বলেছেন, কেন্দ্রটি ইউক্রেনীয়দের কাছে হস্তান্তরের ধারণাটি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দৃষ্টিকোণ থেকে এক উপহাস।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর মার্চেই জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রের দখল নেয় রাশিয়া। তবে পারমাণবিক এই কেন্দ্রটি এখনো ইউক্রেনীয় কর্মীরা পরিচালনা করছে।