সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর কনটেন্ট ও অপপ্রচারকারীদের রুখতে সরকার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। তাই ফেসবুকের কাছ থেকে ব্যবহারকরীর ব্যক্তিগত তথ্য পেতে চায় সরকার। কিন্তু সরকার চাইলেও এসব তথ্য দেবে না ফেসবুক!
সংবিধানে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। তবে সরকারের দাবি, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আপত্তিকর কনটেন্ট ও অপপ্রচারকারীদের রুখতেই নেয়া হচ্ছে এমন উদ্যোগ।
বিশ্বায়নের যুগে রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ! সবার মত প্রকাশের অবাধ সুযোগ করে দিয়েছে ফেসবুক-ইউটিউব’সহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তবে এই দুটো মাধ্যম ব্যবহার করে ভুয়া তথ্য ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে অহরহ। কনটেন্ট নিয়ে আপত্তি থাকলেও তা সরানোর জন্য ফেসবুক-ইউটিউব কর্তৃপক্ষের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় সরকারকে।
এ অবস্থায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ওটিটি প্লার্টফর্মের জন্য তৈরি হচ্ছে নতুন নীতিমালা। যেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে মুক্তিযুদ্ধ, জাতির জনক, জাতীয় সংগীত বা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব নষ্ট এবং ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত লাগা’সহ আপত্তিকর কনটেন্ট প্রচারে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়; আপত্তিকর কনটেন্ট কিংবা গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির যাবতীয় তথ্যও সরকারকে জানাতে হবে।
শনিবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই আয়োজিত হয় মতবিনিময় সভায় বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানালেন, ১৯ অক্টোবরের মধ্যেই চূড়ান্ত হচ্ছে নতুন নীতিমালা।
এ বিষয়ে বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ বলেন, ‘তারা (অপপ্রচারকারীর) পরিচয় প্রকাশ করে না। এটা হতে পারে না। এটা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এখানে ব্যবসা করলে তাকে দায়িত্ব নিয়ে ব্যবসা করতে হবে।’
সরকারের চাওয়া অনুযায়ী অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির জন্য বাংলাদেশে দুইজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে ফেসবুক। তবে, ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সরবরাহ করবে না তারা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশে মেটার হেড অব পাবলিক পলিসি সাবহানাজ রশীদ দিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৩নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। আর আমাদের পক্ষে আলাদা আলাদা ব্যক্তির জন্য তথ্যভান্ডার করা সম্ভব নয়।’
বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে ফেসবুক-ইউটিউবকে রাষ্ট্রীয় আইন অবশ্যই মানতে হবে বলে সাফ জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
বাংলাদেশে বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫ কোটি ২০ লাখ।