কক্সবাজারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (এডি) হাফিজা হক শাহের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ ওঠার পর ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ তাড়াহুড়ো করে পাকিস্তানে ফিরে গেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এই কেলেঙ্কারি তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যার ফলে মারুফকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে বলে একটি সুত্র নিশ্চিত করেছে।
‘সেই চেনা বাংলাদেশ নয়’, হাসিনা-পরবর্তী সময়ে ভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরছেন ভারতীয়েরা
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক হাফিজা হক শাহ বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিভাগে কর্মরত। তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায় বৈদেশিক মুদ্রা বিভাগে তার ভূমিকার কারণে বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ এবং বৈঠক সাধারণ হলেও, পাকিস্তানি হাইকমিশনারের সাথে তার যোগাযোগ এবং সাক্ষাৎ ছিল অস্বাভাবিক এবং ঘন ঘন।
সূত্র থেকে জানা যায় পাকিস্তানি দূতাবাসের কর্মকর্তারা হাইকমিশনার মারুফ এবং সহকারী পরিচালক হাফিজা হক শাহের মধ্যে সম্পর্কের কথা জানতেন। হাফিজা নিয়মিত পাকিস্তান দূতাবাসে যাতায়াত করতেন। মারুফের সাম্প্রতিক কক্সবাজার সফরের সময় বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে, যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। কক্সবাজার ভ্রমণের সময়, হোটেল সি পার্লে তাদের কথিত অনুপযুক্ত সম্পর্কের বিষয়টি “স্পষ্টভাবে উন্মোচিত” হয়ে যায়, যার ফলে তা ধামাচাপা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। জানা যায় বেশ কিছু স্থানীয় এবং জাতীয় সংবাদপত্রের কাছে এই বিষয়ে প্রমাণ রয়েছে, যদিও ইউনূস সরকারের প্রেস উইংয়ের চাপের কারণে তারা এটি প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকে। এর ফলে পাকিস্তান তাদের গুরুত্বপূর্ণ কুটনীতিককে প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। সম্প্রতি সৌদি দূতাবাসের একজন কর্মকর্তার সাথে একই রকম একটি ঘটনা ঘটে, যার ফলে মডেল তারকা মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের অধীনে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ আছে ইউনূস সরকার পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি চাপা দিয়েছিল।
পাসপোর্ট হাতে একজন শিক্ষক, পিছনে ছিল নীল বিদ্রোহের ছায়া
এই ঘটনা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলবে কিনা তা নিয়ে বিশ্লেষকরা আলোচনা করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের একজন অধ্যাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “যদিও এই ধরনের ঘটনা কূটনৈতিক মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তবুও বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের উপর এর সাময়িক প্রভাব পড়তে পারে। তবে, দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নির্ভর করবে উভয় দেশের পরবর্তী পদক্ষেপের উপর।” পাকিস্তান দূতাবাস এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করেনি। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় মারুফের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান উভয় দেশের নাগরিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ এটিকে ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে দেখলেও, আবার কেউ কেউ মনে করেন এটি একজন কূটনীতিকের মর্যাদার অযোগ্য।
এর আগে, ২০১৫ সালে, জঙ্গিদের অর্থায়নের অভিযোগে পাকিস্তান হাইকমিশনের একজন নারী কূটনীতিক ফারিনা আরশাদকে বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে হয়েছিল। এই ধরনের ঘটনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে চলেছে। ঢাকায় বাংলাদেশ সরকার এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলি ইঙ্গিত দিয়েছে যে দুই দেশের মধ্যে পর্দার আড়ালে আলোচনা চলছে।
অন্য কোন সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি না আসলেও ঢাকায় বিডি ডাইজেষ্ট নামের একটি নিউজ পোর্টাল এই সংবাদটি প্রচার করে ১৩মে ২০২৫।