বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের হাত ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমানে সুঁই, সুতো আর আধুনিক যন্ত্রপাতির মেলবন্ধনে প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের পোশাক। দীর্ঘদিন ধরে আমিরাতের এই প্রদেশে পোশাক উৎপাদনে আধিপত্য ধরে রেখেছেন বাংলাদেশিরা। ছোট পরিসরে ব্যবসা শুরু করলেও ক্রমান্বয়ে সফলতা পেয়েছেন অনেকে।
ব্যবসায়ীরা জানান, আমিরাতের তৈরি পোশাকের বড় কেন্দ্র এটি। যেখানে দুই হাজার ব্যবসায়ীসহ প্রায় ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন। আজমানের এক বাজারেই রয়েছে বাংলাদেশিদের ৫০০-এর বেশি তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠান। দেশ থেকেও পণ্য এনে বাজারজাত করেন অনেক বাংলাদেশি। প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতি মাসে ২৫ কোটি টাকার মতো ব্যবসায়িক টার্নওভার হয়।
বরিশালের শেফালী আক্তার আঁখি আজমানে তৈরি পোশাক খাতে একজন উদ্যোক্তা। ২০ বছরের ব্যবধানে গড়ে ওঠেছে তাঁর পাঁচটি পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠান। যেখানে দুই শতাধিক কর্মী কাজ করছেন। বেশ কিছু দেশে রপ্তানি হয় তাঁর পণ্য।
দিনাজপুরের মোহাম্মদ আনিসুর রহমানও একই বাজারের ব্যবসায়ী। ৯ বছর ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছেন তিনি। নিজের শুরুটা শ্রমিক হিসেবে হলেও এখন তার অধীনে বর্তমানে কাজ করছেন ৩০ জন কর্মী।
বরিশালের দিদারুল আলম শুরুতে অপারেটর হিসেবে এই খাতে এলেও ২০০৯ সালে নিজের মালিকানায় পোশাক উৎপাদনের কাজ শুরু করেন। অল্প সময়ে হয়ে ওঠেন সফল উদ্যোক্তা।
আজমান শহরে তৈরি পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও রয়েছে বাংলাদেশিদের বড় একটি পাইকারি বাজার। স্থানীয়ভাবে এটি ‘বাঙালি মার্কেট’ নামে পরিচিত। প্রতি বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার পণ্য আসে এই বাজারে। আমিরাতের চাহিদা পূরণ করে পোশাক রপ্তানি হয় সৌদি আরব, ইরান, ওমান, মিসর, তুরস্কসহ বেশ কিছু দেশে।
ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বাংলাদেশ থেকে পণ্য আনতে সময় লাগে ২০ থেকে ৩০ দিন। শিপমেন্ট জটিলতা ও সময়ের দূরত্ব কমানো গেলে এই বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।