সাত দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। আজ দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নেই। এই সরকার বিদেশিদের কাছে দেশটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে।
তারা বলেন, সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য এখন পুলিশকে বাহবা দিচ্ছে। ভারতের কাছে গিয়ে তোষামোদ করছে, আবার আমেরিকারও হাত-পা ধরছে। অবিলম্বে সরকার যদি চলে না যায়, যদি বেশি সময় পায়, তাহলে ওরা আরো বেশি ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে আবারও ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করবে। তাই দেশকে রক্ষা করতে, দেশের জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই।
রোববার পুরানো পল্টন মোড়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন। জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার ও দ্রব্যমূল্য কমানোর দাবিতে আগামী ২৭ আগস্ট জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ ও পদযাত্রাকে সামনে রেখে নেতারা লিফলেট বিতরণ করেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের শরীক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের শত্রু। মানবতার শত্রু। তারা এই দেশের গণশত্রু। ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে রাতের ভোটে নির্বাচিত বলে মানুষের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। জনগণের প্রতি কোনো সহমর্তিতা নেই।
তিনি আরও বলেন, দেশ স্বাধীন করেছি লুটপাট করে খাওয়ার জন্য নয়। বিদেশে টাকা পাচার করার জন্য নয়। এক মন্ত্রী বলেছেন- জনগণের গায়ে কাপড় আছে। কিন্তু আমি বলতে চাই- দুর্নীতি অত্যাচার নিপীড়নের কারণে জনগণ একদিন আপনাদের কাপড় খুলে নেবে।
‘শেখ হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করার সেটা করতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছি’ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরে যাওয়ার আগে সরকার প্রধানের সঙ্গে দেখা করে যান। শুধু তাই নয়, সেখানে গিয়ে কি বলবেন সেটাও সরকার প্রধানের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে যান। এর ফলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যা বলেছেন, সেটার তার বক্তব্য নয়, সরকারের বক্তব্য। তাই শুধু এই মন্ত্রীকে নয় পুরো সরকারের অপসারণ করতে হবে।
দেশের দায়িত্ব শুধু রাজনৈতিক দলের নয় উল্লেখ করে জেএসডি সভাপতি বলেন, দেশ বাচাঁনোর দায়িত্ব শুধু রাজনৈতিক দলের নয়, কর্মজীবী, পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষকে এই সরকারকে রুখে দিতে আহ্বান জানান তিনি।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে কয়েকবার বলেছি, ষড়যন্ত্রের কোনো ব্যাপার নেই। আমরা আপনার পদত্যাগ চাই।
তিনি আরও বলেন, এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন, ততদিন দেশের দুর্ভাগ্য বাড়বে, মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। সরকারকে হটাতে এখনই আরও বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলে আন্দোলনের আহ্বান জানান তিনি।
জোটের শরীক দল গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি জানান, সোমবার সকাল ১১টায় মোহাম্মদপুর টাউন হলের সামনে থেকে লিফলেট বিতরণ ও পদযাত্রা শুরু করবেন তারা। এভাবে আগামী ২৬ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন লিফলেট বিতরণ ও পদসভা করা হবে।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু প্রমুখ।