চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর চংকিং-এ গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। ভয়াবহ তাপপ্রবাহের কারণে শহরটিকে ঘিরে থাকা বনাঞ্চলেও আগুন লেগে গেছে। সেই বিধ্বংসী দাবানল চংকিং মহানগরের চারপাশের বন ও পাহাড়কে ক্রমাগত গ্রাস করছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হাজার হাজার দমকলকর্মী লড়াই করে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার সকালে শহরটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গত ১৮ আগস্ট থেকে শহরের বাইরের একাধিক বনাঞ্চলে এই দাবানল শুরু হয়। চংকিং শহরে ৩ কোটি ২০ লাখ লোকের বসবাস। তবে দাবানলে এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, দেড় হাজার স্থানীয় বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এবং ৫০০০ দমকলকর্মী, পুলিশ, স্থানীয় কর্মকর্তা, স্বেচ্ছাসেবক এবং সাতটি অগ্নিনির্বাপক হেলিকপ্টার দাবানল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
মঙ্গলবার চংকিং-এর সমস্ত জেলা এবং কাউন্টিগুলোতে বনাঞ্চলে আগুনের ব্যবহার এবং আগুন লাগতে পারে এমন কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
চংকিং ছাড়াও দেশজুড়ে অসংখ্য দাবানলে পুড়ছে বনাঞ্চল। চীনের কতৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৯৬১ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের কবলে পড়েছে তাদের দেশ। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিম, মধ্য এবং পূর্ব অংশেও দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটির শতাধিক শহরের তাপমাত্রা ইতিমধ্যেই ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে।
মঙ্গলবার সকালে চীনের আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আরও ১৬৫টি শহরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। শহরগেুলোতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
এছাড়া চীনজুড়ে আরও ৩৭৩টি শহর বা কাউন্টিতে দ্বিতীয়-সর্বোচ্চ সতর্কতা বা অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী তিন দিনের মধ্যে এই শহরগুলোতেও তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে।
চীনের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ দপ্তর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জনগণকে উচ্চ তাপমাত্রার সময় ঘরের বাইরের কার্যকলাপ এড়িয়ে চলা এবং গরম অবস্থায় কাজ সীমিত করার পরামর্শ দিয়েছে।
চলতি গ্রীষ্মে সারা দেশে ৯০ কোটিরও বেশি মানুষ তাপপ্রবাহে আক্রান্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছে চীনের কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, এবছর শুধু চীনেই নয় বরং পুরো বিশ্বজুড়েই চরমভাবাপন্ন আবহওয়া দেখা যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রেও তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে এবং দাবানলের অসংখ্য ঘটনা ঘটছে।