ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃত্যকলা বিভাগের ছাত্রী এলমা চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী কানাডা প্রবাসী ইফতেখার আবেদীনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ করা মামলাটির অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত।
বুধবার (২৪ আগস্ট) মামলাটি নারাজি (আপত্তি) দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। এদিন এলমার বাবা আদালতে হাজির হন। তবে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আপত্তি নেই মর্মে আদালতকে জানান। এরপর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবুবকর ছিদ্দিক এলমার স্বামী ইফতেখার আবেদীনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে এলমার শ্বশুর লে. কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. আমিন ও শাশুড়ি শিরিন আমিনকে অব্যাহতি দেন।বনানী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা (জিআরও) আলমগীর হোসেন এসব তথ্য জানান।
গত ৩১ মে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবির পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম ইফতেখার আবেদীনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মৃত্যুর দিন এলমা বাইরে যেতে চাইলেও ইফতেখার তাকে যেতে বাধা দেয় ও তাকে কটূক্তি ও শারীরিক নির্যাতনের পর একটি কক্ষে আটকে রাখে। একপর্যায়ে এলমা রুমের ভেতরে আত্মহত্যা করে।
গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী এলমা চৌধুরীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এলমার বাবা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ১৫ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করেন।মামলায় এলমার স্বামী ইফতেখার আবেদীন, তার মা শিরিন আমিন ও ইফতেখারের পালক বাবা মো. আমিনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় ইফতেখারকে তিন দফায় সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
মামলায় সাইফুল ইসলাম চৌধুরী অভিযোগ করেন, চলতি বছরের এপ্রিলে এলমার সঙ্গে ইফতেখারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ইফতেখার ও তার মা-বাবা এলমাকে পড়ালেখা বন্ধ করে দিতে বলেন। এলমা পড়া বন্ধ করতে না চাওয়ায় ইফতেখার ও তার মা-বাবা মিলে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। একপর্যায়ে মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। বিয়ের তিন মাস পর ইফতেখার কানাডায় চলে যান। এরপর ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় ফেরেন ইফতেখার।
এর দুই দিন পর ১৪ ডিসেম্বর এলমার মায়ের মুঠোফোনে কল করে ইফতেখার বলেন, তার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য গুলশানের একটি হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। তাদের আসতে বলেন তিনি।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সন্দেহজনক আচরণ দেখে মেয়ের লাশ পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। এ সময় এলমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমের চিহ্ন পাওয়া গেলে তিনি মামলা করেন।