নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, সময়মতো সংসদ নির্বাচন না হলে ইসিকে সংবিধান লঙ্ঘনের জন্য দায়ী হতে হবে। তাই কোনো একটা দল না এলেও নির্বাচন করতে হবে। রাজনৈতিক সংলাপে বেশিরভাগ দল ইভিএমের পক্ষে ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করছিলেন তিনি। বিএনপি না এলেও নির্বাচন হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারও নাম উল্লেখ করব না। আমরা বলব, কোনো দল এলেও নির্বাচন হবে, না এলেও হবে।
তিনি আরও বলেন, কোনো দলকে নির্বাচনে আনা বা না আনার দায়িত্ব ইসির নয়। সংবিধানের কোথাও তাদের এই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
ইভিএমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক ইসি সচিব আলমগীর বলেন, ৩৯টি দলের কথাকেই আমরা মূল্যায়ন করেছি। আমাদের দৃষ্টিতে সবাই সমান। ওনারা কী বলেছেন, তা আমাদের কাছে রেকর্ড আছে। সেগুলোর ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেখানে দেখা গেছে, বেশিরভাগ দল ইভিএমের পক্ষে বলেছে। সুতরাং, কারও কথা আমরা উপেক্ষা করেছি- এই বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।
ইভিএমের কারণে আরও কিছু দল যদি ভোটে না আসে, তাহলে এই সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, সংবিধানে বলা আছে যারা আগ্রহী তাদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করবে। সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে নির্বাচন করতে হবে, এ কথা কিন্তু বলা হয়নি। কোনো দলের হয়তো সক্ষমতা নাও থাকতে পারে। আমাদের দিনক্ষণ গুনে কিন্তু নির্বাচন করতে হবে। কোনো দলের বা একাধিক দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা থাকতে পারে। অপেক্ষা করেন, এখনও তো এক বছর সময় আছে, আসতেও পারে।
সংসদ নির্বাচনে ইভিএম কোথায় ব্যবহার হতে পারে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারও কারও মতামত আছে শহরে। কারণ এখানে শিক্ষিত লোক বেশি, প্রশিক্ষণ শহরে দেওয়া হয়েছে, সিটিসহ অন্যান্য নির্বাচন হয়েছে শহরে। তাই শহরে ইভিএম দেওয়ার মতামত আছে। অনেকেই বলেছেন, গ্রামে না দিলে তো তারা জানতে পারবেন না। এসব আলোচনা হয়েছে। ফাইনাল হবে তপশিলের সময়।
তিনি জানান, বর্তমানে সক্ষমতা আছে ৭০ থেকে ৮০টা আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করার। কতটা হবে তখন বলা যাবে। দেখা গেল, মেশিন হয়েছে বা সক্ষমতা নেই, তাহলে ৭০-৮০টাও হতে পারে, আবার ৫০টাতেও হতে পারে। তবে ১৫০টির ওপরে হবে না। মিনিমাম ধরে রাখেন ৭০-৮০টা। কোনো কারণে নতুন মেশিন কিনতে না পারলে বা ফান্ড না পেলেও তো কিনতে পারব না। ১৫০টি আসনের জন্য আনুমানিক আরও প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ ইভিএম কিনতে হবে। বিদেশি কোম্পানি কত দাম চায়, প্রশিক্ষণের বিষয় আছে, ওই সময় ডলারের দাম কত থাকবে, এসব বিষয় নিয়ে প্রকল্প নেওয়া হবে।
আস্থার সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত কোন নির্বাচন কমিশন আস্থা অর্জন করেছে, তা বলা যাবে না। কোনো বিচারক দু’পক্ষে রায় দিতে পারবেন না। ইসিও আইন-কানুন ফলো করে ন্যায়টাই করবে। নির্বাচন কমিশন উভয়পক্ষকে খুশি করার সক্ষমতা রাখে না।
নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা ইভিএমে কারিগরি সহায়তা দিতে ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। এ ছাড়া অন্য কোনো ভূমিকায় রাখার সুযোগ নেই। যেখানে প্রয়োজন আছে, সেখানে ডাকলে চলে আসবে। এত লোকবল তো তাদের নেই। পুলিশ, বিজিবি, আনসারের মতো তো প্রতি কেন্দ্রে তাদের রাখা সম্ভব নয়। উত্তেজিত জনতাকে কন্ট্রোল করতে না পারলে সেনার সহায়তা চাওয়া হয়। সেটাই নিয়ম। সেটাই আইনে বলা আছে।