সারা দেশে বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার এবং আজ শুক্রবার নরসিংদী, খুলনা, ঝিনাইদহ গাজীপুরের কালিগঞ্জ, নড়াইল, বরিশাল দক্ষিণ ও উত্তর জেলা, পটুয়াখালী ও মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, সন্ত্রাসীরা বর্বরোচিত ও নিষ্ঠুর হামলা চালিয়ে নেতা কর্মীদের গুরুতর আহত করেছে। পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে অসংখ্য নেতা কর্মীকে। এছাড়া রাজশাহী মহানগরের কাশিয়াডাঙ্গা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোমিনুল ইসলাম রনিকে হত্যার উদ্দেশ্যে আওয়ামী দুষ্কৃতকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করেছে। তিনি এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।
আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা সংঘটিত এসব নৃশংস ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করার হীন চক্রান্তের অংশ হিসেবে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করছে। সরকারের নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে সরকারদলীয় সন্ত্রাসী এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপি নেতা কর্মীদের ওপর হামলা, ভাঙচুর, বানোয়াট মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার এবং বিএনপির সভা-সমাবেশ পণ্ড করার কাজে সিপাহসালারের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। গণবিচ্ছিন্ন আওয়ামী সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং দলীয় সন্ত্রাসীদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে দাম্ভিকতা, রক্তপাত আর মিথ্যাচারকে পুঁজি করে দেশ চালাতে গিয়ে রাষ্ট্রকে গভীর সংকটে নিপতিত করেছে। অন্যায় অবিচার ও ভয়াবহ অপশাসনের বিরুদ্ধে কেউ যাতে দুঃসাহস দেখাতে না পারে সে জন্য বিএনপিকে ধ্বংস করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে সরকার। তারা বিএনপি এবং বিরোধী দলগুলোর সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক কর্মসূচি বানচাল করতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে বেপরোয়াভাবে ব্যবহার করছে। দেশব্যাপী বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচি বানচালের লক্ষ্যে আজ নরসিংদীর রায়পুরায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন এবং সদস্য রফিকুল আমিন ভুঁইয়াসহ অনেক নেতা কর্মীকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা।
বৃহস্পতিবারও খুলনা জেলাধীন দিঘলিয়ায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা পুলিশের ছত্র ছায়ায় হামলা চালিয়ে খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্লা খায়রুল ইসলাম, বিএনপি নেতা সোহেল পারভেজ, ইব্রাহিম শেখ, ছাত্রদল নেতা সবুজ গাজী, আমির হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন, রাব্বি রিয়াজ, জুলফিকার গাজীসহ কমপক্ষে ৩০ জন নেতা কর্মীকে গুরুতর আহত করে। গ্রেপ্তার করা হয় দিঘলিয়া উপজেলা যুবদল নেতা কুদরতে ইলাহী স্পিকার ও রাসেল আহমেদ নাসিমসহ সারা দেশে অন্তত একশত কর্মীকে আটকের অভিযোগ তোলা হয়েছে পাঠানো বিবৃতিতে।
সরকার পতন অতি সন্নিকটে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এসব ঘটনা প্রমাণ করে-সরকার জনবিস্ফোরণের আতঙ্কে ভুগছে, আর তাই তারা দ্বিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে বিএনপি নেতা কর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তবে সকল অপকর্মের জন্য সরকারের পতন এখন খুবই সন্নিকটে। সেই সঙ্গে আহত নেতা-কর্মীদের দ্রুত সুস্থতা কামনা এবং গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।