ভারতের কেজিএফ সিনেমা দেখে বিখ্যাত হওয়ার ইচ্ছা হয় ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ১৯ বছর বয়সী শিব প্রসাদের। তাই সিনেমার অনুকরণে সিরিয়াল কিলার হয়ে পরপর পাঁচজন নিরাপত্তাকর্মীকে খুন করে সে। পঞ্চম খুনের সময় শুক্রবার মধ্যপ্রদেশ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। প্রতিটি খুনের ক্ষেত্রেই হাতুরি অথবা পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেছে।
পুলিশের জেরায় শিব জানিয়েছে, গ্যাংস্টার হওয়ার ইচ্ছা এবং ধনী হওয়ার নেশায় সে একের পর এক খুন করেছে।
কিন্তু তার এই কথার কতটুকু ভিত্তি এবং বাস্তবতা রয়েছে তা খতিয়ে দেখতে শিব প্রসাদের বাড়ির লোকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তাদের দেওয়া জবানবন্দিতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
শিব প্রসাদের পরিবারের দাবি, সে আর চার-পাঁচটা সুস্থ, স্বাভাবিক ছেলের মতোই ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই তার ব্যবহারে কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। একদম চুপচাপ, শান্ত হয়ে গিয়েছিল সে। পরিবারের সঙ্গেও দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেছিল সে।
পুলিশ জানিয়েছে, শিব যেখানে কাজ করত, সেখানকার বেতন তার কাছে যথেষ্ট মনে হত না। যে টাকা পেত তা সঙ্গে সঙ্গে খরচও করে ফেলত। বাড়ি ছেড়ে অন্য রাজ্যে কাজ করতে গিয়েছিল শিব। প্রথমে যায় মহারাষ্ট্রের পুণেতে। সেখানে ওয়েটারের কাজ করত। তার প্রথম অপরাধের সূচনা সেখান থেকেই। হোটেল মালিককে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। তারপর সেই কাজ ছেড়ে চলে আসে।
শিবের বাবা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শুধু মহারাষ্ট্রই নয়, খুব অল্প বয়স থেকে কাজের জন্য গিয়েছে অনেক রাজ্যে। যখনই বাড়ি ফিরত, মায়ের কাছে টাকা চাইত। না দিতে চাইলে জোরাজুরি করত। না দিতে পারলে মাকে বলত, ‘আত্মহত্যা করে মরছ না কেন!’
শিবের ভাই জানিয়েছে, গত চার বছর ধরে তার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ রেখেছ সে। তিনি বলেন, ‘দাদার আচরণে একটা অস্বাভাবিকত্ব লক্ষ করেছিলাম’
পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে শিব স্বীকার করেছে যে খুন করার জন্য ইন্টারনেটে অপরাধমূলক ভিডিও দেখত সে। আর তা থেকেই অনুপ্রেরণা নিয়ে অপরাধ জগতে নাম লেখায় শিব।
এদিকে শিব প্রসাদের পরিবার তাদের ছেলের এই অপরাধকে কোনো ভাবেই সমর্থন করেননি। বরং শিবের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।