এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলংকার মুখোমুখি হচ্ছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। এ ম্যাচ জিতলে ফাইনালে খেলার আশা বেঁচে থাকবে ভারতের। আর হেরে গেলে, ভারতের ফাইনালে খেলার সুযোগ অনেকাংশেই শেষ হয়ে যাবে। আর ভারতকে হারাতে পারলে, ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখবে শ্রীলংকা।
সুপার ফোরে ভারত ও শ্রীলংকার মধ্যকার ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়।
গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচ জিতে সেরা দল হয়েই সুপার ফোরের টিকিট পায় ভারত। চিরপ্রতিন্দ্বন্দি পাকিস্তান ও হংকংকে হারিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হোচট খায় ভারত। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে চিরপ্রতিন্দ্বন্দি পাকিস্তানের কাছে ৫ উইকেটে হারে তারা। বিরাট কোহলির হাফ-সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮১ রানের বড় সংগ্রহ পেয়েছিল ভারত। ৪৪ বলে ৬০ রানের দারুন এক ইনিংস খেলেন কোহলি।
জবাবে ওপেনার মোহম্মদ রিজওয়ানের দুর্দান্ত লড়াকু ইনিংসের সাথে মিডল-অর্ডারে মোহাম্মদ নেওয়াজের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ভারতকে ৫ উইকেটে হারের স্বাদ দেয় পাকিস্তান। রিজওয়ান ৫১ বলে ৭১ ও নাওয়াজ ২০ বলে ৪২ রান করেন। নেওয়াজের ৪২ রানের ইনিংসটিই ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দেয়। শেষদিকে ভারতের আর্শদীপ সিংয়ের হাতে জীবন পেয়ে, ৮ বলে ১৬ রানের ইনিংস খেলে পাকিস্তানের জয়ে ভূমিকা রাখেন আসিফ আলি। তবে নেওয়াজের ইনিংসটিই ম্যাচের নিষ্পতি করেছে বলে মনে করেন কোহলি, ‘নেওয়াজের ইনিংসটাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। নেওয়াজ যদি ১৫-২০ রানের ইনিংস খেলতো, তাহলে কিছু হতো না। কিন্তু সে ৪২ রানের ইনিংস খেলেছে। এ রকম একটা ইনিংস ম্যাচে প্রভাব ফেলতে বাধ্য। বিশেষত এ রকম টানটান ম্যাচে। তার ইনিংস থেকেই আমাদের ওপর চাপ শুরু হয়।’
তবে পরের ম্যাচেই ভারত ঘুড়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন কোহলি। তিনি বলেন, ‘পরের ম্যাচেই দল ঘুড়ে দাঁড়াবে। শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচটি সহজ হবে না। শেষ দুই ম্যাচের দারুণ দু’টি পেয়েছে তারা। আমাদের এ ম্যাচটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে। জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছি না আমরা।’
অন্যদিকে হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করেছিল শ্রীলংকা। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে হেরেছিলো লংকানরা। তবে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২ উইকেটে নাটকীয় জয় দিয়ে সুপার ফোরে উঠে শ্রীলংকা। বাংলাদেশের ছুড়ে দেয়া ১৮৪ রানের স্পর্শ করে ফেলে তারা।
সুপার ফোরেও আত্মবিশ্বসী শ্রীলংকা। গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তানের কাছে হারের প্রতিশোধ নেয় লংকানরা। আফগানদের ১৭৬ রানের টার্গেট স্পর্শ করে ৪ উইকেটে জয় পায় শ্রীলংকা। এবার ভারতের বিপক্ষেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে মরিয়া লংকানরা। দলের স্পিনার হাসারাঙ্গা ডি সিলভা বলেন, ‘শেষ দুই ম্যাচের জয় আমাদের দলের মনোবল চাঙ্গা করে দিয়েছে। তাই শক্তিশালী ভারতকে হারানোর ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ^াসী। নিজেদের সেরাটা খেলতে পারলে, জয় অসম্ভব কিছুই না।’
ভারত-শ্রীলংকা হেড টু হেড
এ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ২৫বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও শ্রীলংকা। এরমধ্যে ১৭বার জিতেছে ভারত। সাতবার জয় আছে শ্রীলংকার। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছিলো দুই দল। ভারতের মাটিতে তিন ম্যাচের ওই সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় শ্রীলংকা। তবে এশিয়া কাপের ভারত-শ্রীলংকার জয়-হার সমান-সমান। ২০ ম্যাচের মধ্যে সমান ১০বার করে জয় পেয়েছে ভারত ও শ্রীলংকা। ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হওয়া আসরে শ্রীলংকাকে ৫ উইকেটে হারিয়েছিলো ভারত
শ্রীলংকা দল : দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), কুশল মেন্ডিস (উইকেটরক্ষক), দীনেশ চান্দিমাল, দানুশকা গুনাথিলাকা, পাথুম নিশাঙ্কা, চারিথ আসালঙ্কা, ভানুকা রাজাপাকসে, আসিন বান্দারা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাহেশ থিকশানা, জেফ্রি ভান্দারসে, প্রভীন জয়াবিক্রমা, চামিকা করুনারতেœ, দিলশান মধুশঙ্কা, মাথেশ পাথিরানা, নুয়ান্দু ফার্নান্দো, আসিথা ফার্নান্দো, প্রমোদ মধুশান ও নুয়ান থুসারা।
ভারত দল : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, ঋষভ পান্ত (উইকেটরক্ষক), দিনেশ কার্তিক, হার্দিক পান্ডিয়া, অক্ষর প্যাটেল, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ভুবনেশ্বর কুমার, আর্শদিপ সিং, রবি বিষ্ণই, আভেশ খান, দীপক হুডা ও যুজবেন্দ্রা চাহাল।