সময়ের থেকে এগিয়ে থাকা এক নায়ক ছিলেন সালমান শাহ। নব্বই দশকের চলচ্চিত্রে তাকে ঘিরে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল তা শেষ হয়ে যায় তার অপমৃত্যুর মধ্য দিয়ে। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। আজ তার ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী।
মৃত্যুর দুই যুগ পেরিয়ে গেছে ঠিকই, কিন্তু আজও তিনি সমসাময়িক। টেলিভিশনে তার সিনেমা প্রচারিত হলে অনুরাগীরা চ্যানেল পাল্টাতে পারেন না। জমে থাকা আবেগ আর ভালোবাসা নিয়ে মুগ্ধ হয়ে দেখেন প্রিয় নায়কের অভিনয়। স্টাইল ও ফ্যাশন সচেতনতা আফসোস বাড়িয়ে দেয় তাদের। দীর্ঘশ্বাস ফেল বলেন, বড্ড তাড়াতাড়ি চলে গেলেন সালমান!
মাত্র ২৫ বছরের জীবন সালমান শাহর। চার বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বেশিরভাগ সিনেমা ছিল ব্যবসাসফল। তিনি কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির দর্শকের নায়ক ছিলেন না। সব ধরনের দর্শকের পছন্দের নায়ক হিসেবে গ্রহযোগ্যতা পেয়েছিলেন।
১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের দারিয়াপাড়ায় নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সালমান শাহ। তার বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। দুই ভাইয়ের মধ্যে সালমান বড়। ছোট ভাই শাহরান চৌধুরী ইভান। বৃশ্চিক রাশির জাতক সালমানের বিনোদনজগতে যাত্রা শুরু হয় বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হিসেবে। তিনি ইস্পাহানি গোল্ডস্টার টি, জাগুয়ার কেডস, মিল্ক ভিটা, কোকাকোলা, ফানটা এবং জাগুয়ার কেডসের বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেন।
১৯৮৫ সালের দিকে হানিফ সংকেতের ‘কথার কথা’ নামের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন সালমান। তখন অবশ্য তিনি ইমন নামেই পরিচিত ছিলেন। পরে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে ‘সালমান’ নামে আবির্ভূত হন। এই সিনেমাটি তাকে অন্য উচ্চতা নিয়ে গিয়েছিল। রাতারাতি তিনি হয়ে ওঠেন ঢালিউডের রাজপুত্র।
সালমান শুধু অভিনেতাই ছিলেন না, চলচ্চিত্রে নতুন ধারার প্রবর্তকও ছিলেন। একক কৃতিত্বে সামাজিক-অ্যাকশনধর্মী ও নিটোল প্রেমের ছবির নতুন একটি ধারার সঙ্গে সবাইকে পরিচিত করেছিলেন তিনি।