এশিয়া কাপ
জিতলেই ফাইনালের হাতছানি শ্রীলঙ্কার সামনে। অন্যদিকে সুপার ফোরে এক ম্যাচে হেরে কোনঠাসা ভারত। আজ হারলে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় অনেকটা নিশ্চিত। যদিও সমীকরণে শেষ ম্যাচ আফগানদের বিপক্ষে জিতে পয়েন্টের হিসেবে ফাইনালের টিকিট পেতেও পারে ভারত। কিন্তু সেই কঠিন সমীকরণের সামনে নিশ্চয় পড়তে চাইবে না রহিত শর্মার দল। আবার ‘যদি-কিন্তুর’ হিসাবটা শ্রীলঙ্কার জন্যও একই। প্রথম ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে জিতে পয়েন্ট টেবিলে শক্ত অবস্থানে দাসুন শানাকার দল। কোনোভাবেই ম্যাচ হেরে জটিল সমীকরণের চাপে পড়তে চাইবে না দলটি। তারাও চাইবে আজ জিতে ফাইনালের পথটা আরেকটু পাকাপোক্ত করতে। সে হিসেবে আজকের মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দুই দলই জিততে মরিয়ো।
সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খায় ভারত। পরশু রাতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কাছে ৫ উইকেটে হারে তারা। বিরাট কোহলির হাফ সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮১ রানের বড় সংগ্রহ পেয়েছিল ভারত। ৪৪ বলে ৬০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন কোহলি।
জবাবে ওপেনার মোহম্মদ রিজওয়ানের দুর্দান্ত লড়াকু ইনিংসের সঙ্গে মিডল-অর্ডারে মোহাম্মদ নাওয়াজের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ভারতকে ৫ উইকেটে হারের স্বাদ দেয় পাকিস্তান। রিজওয়ান ৫১ বলে ৭১ ও নাওয়াজ ২০ বলে ৪২ রান করেন। নাওয়াজের ৪২ রানের ইনিংসটিই ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দেয়। শেষদিকে ভারতের আর্শদীপ সিংয়ের হাতে জীবন পেয়ে, ৮ বলে ১৬ রানের ইনিংস খেলে পাকিস্তানের জয়ে ভূমিকা রাখেন আসিফ আলি।
তবে নাওয়াজের ইনিংসটিই ম্যাচের নিষ্পতি করেছে বলে মনে করেন কোহলি, ‘নাওয়াজের ইনিংসটাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। নাওয়াজ যদি ১৫-২০ রানের ইনিংস খেলতো, তা হলে কিছু হতো না। কিন্তু সে ৪২ রানের ইনিংস খেলেছে। এ রকম একটা ইনিংস ম্যাচে প্রভাব ফেলতে বাধ্য। বিশেষত এ রকম টানটান ম্যাচে। তার ইনিংস থেকেই আমাদের উপর চাপ শুরু হয়।’
তবে পরের ম্যাচেই ভারত ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করেন কোহলি। তিনি বলেন, ‘পরের ম্যাচেই দল ঘুরে দাঁড়াবে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি সহজ হবে না। শেষ দুই ম্যাচে দারুণ দুটি জয় পেয়েছে তারা। আমাদের এ ম্যাচটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে। জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছি না আমরা।’
অন্যদিকে হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে হেরেছিল লঙ্কানরা। তবে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২ উইকেটে নাটকীয় জয় দিয়ে সুপার ফোরে উঠে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া ১৮৪ রান স্পর্শ করে ফেলে তারা।
সুপার ফোরেও দেখা যায় আত্মবিশ্বাসী শ্রীলঙ্কাকে। গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তানের কাছে হারের প্রতিশোধ নেয় লঙ্কানরা। আফগানদের ১৭৬ রানের টার্গেট স্পর্শ করে ৪ উইকেটের জয় পায় শ্রীলঙ্কা। এবার ভারতের বিপক্ষেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে মরিয়া শ্রীলঙ্কা। দলের স্পিনার হাসারাঙ্গা ডি সিলভা বলেন, ‘শেষ দুই ম্যাচের জয় আমাদের দলের মনোবল চাঙ্গা করে দিয়েছে। তাই শক্তিশালী ভারতকে হারানোর ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী। নিজেদের সেরাটা খেলতে পারলে, জয় অসম্ভব কিছুই না।’
এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ২৫ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে ১৭ বার জিতেছে ভারত। ৭ বার জয় আছে শ্রীলঙ্কার। ১টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। ভারতের মাটিতে তিন ম্যাচের ওই সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় শ্রীলঙ্কা।
তবে এশিয়া কাপের ভারত-শ্রীলঙ্কার জয়-হার সমান-সমান। ২০ ম্যাচের মধ্যে সমান ১০ বার করে জয় পেয়েছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হওয়া আসরে শ্রীলঙ্কাকে ৫ উইকেটে হারিয়েছিল ভারত।