বিদেশ থেকে বেশি দামে চাল ও গম কেনার ব্যাখ্যা দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দরকষাকষির সময়ই দাম বেশি ছিল। এর পরও আমরা প্রাক্কলিত দরের চেয়ে সাত ডলার কমে রাশিয়ার কাছ থেকে গম কিনেছি। এ সময় খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেনও মন্ত্রীর সঙ্গে বেশি দামে কেনার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভিয়েতনাম থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার, মিয়ানমার থেকে ২ লাখ ও ভারত থেকে ১ লাখ টন চাল কেনা হচ্ছে। ভিয়েতনামের সেদ্ধ চাল প্রতি টন ৫২১ ডলার, আতপ ৪৯৪ এবং ভারতের ৪৪৩ দশমিক ৫ ডলার পড়বে। আর রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম কেনা হচ্ছে, দর পড়বে ৪৩০ ডলার।
এ সময় সাংবাদিকরা জানতে চান, রাশিয়ার কাছ থেকে গম আমদানির সিদ্ধান্তের সময় ২৪ আগস্ট আন্তর্জাতিক বাজারে দাম ছিল প্রতি টন ৩২৪ ডলারের কাছাকাছি। অন্যান্য খরচ মিলিয়ে আনুমানিক ব্যয় দাঁড়ায় প্রতি টন ৩৮০ ডলারের মতো। সেখানে সরকার ৫ লাখ টন গম কিনছে টনপ্রতি ৪৩০ ডলার দরে। একইভাবে ভিয়েতনাম থেকে যে চাল প্রতি টন ৫২১ ডলার দরে কেনা হচ্ছে, তা ভারত থেকে কিনলে কম দাম হতো। ভিয়েতনাম থাইল্যান্ডের মাধ্যমে চাল দেওয়ায় প্রতি টনে ৫০ থেকে ৬০ ডলার বেশি দিতে হচ্ছে। সরকারের ক্ষতি হচ্ছে। এর জবাব কী?
উত্তরে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চাল-গমের দাম ওঠানামা করে। বাংলাদেশ কেনার জন্য যখন দরকষাকষি করে, তখন দাম বেশি ছিল। আর থাইল্যান্ড থেকে সরাসরি চাল কেনার জন্য একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা এতদিনে সাড়া দিয়েছে যে কী নমুনা, কী দাম, কীভাবে নেবেন, জাহাজ কোথায় ইত্যাদি। আগে এক সময় থাইল্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করার পরও তারা চাল দেয়নি বলে একটি মতবিরোধ আছে। তার পরও তারা এগিয়ে এসেছে। সরকারও চাল নিতে প্রস্তুত রয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ১৯ লাখ ৬৪ হাজার টনের বেশি খাদ্যশস্য (চাল ও গম) মজুত আছে। আর কৃষিক্ষেত্রে খরা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে পর্যাপ্ত চাল ও গম আমদানি করা হচ্ছে।