কর্মব্যস্ত জীবনের ফাঁকে যদিও মেলে একটু অবসর। অনেক সময়ই মন খুলে কথা বলার বা একটু আড্ডা দেয়ার মানুষ পাওয়া যায় না। এছাড়া বন্ধু কিংবা পরিবারের সদস্যদের কাছে অনেক কথাই বলতে দ্বিধায় পড়তে হয়। যারা এসব সমস্যায় ভুগছেন তাদের সঙ্গ দিতে জাপানে নিজেকে ভাড়া দিচ্ছেন ৩৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি।
যাদের কোনো বন্ধু কিংবা গল্প করার মতো কেউ নেই, তারা ভাড়া করেন তাকে। আড্ডা দেয়া, মনের কথা শোনা, রেস্টুরেন্টে একসাথে খাবার খাওয়াসহ নানাভাবে মানুষকে সঙ্গ দেন ভাড়াটে এ সঙ্গী। অভিনব এ কাণ্ডের কারণে শোজি মোরিমতো নামের ভাড়াটে এ সঙ্গী এরইমধ্যে জাপানজুড়ে পেয়েছেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা। দিনে তিন থেকে চারবারও ভাড়ায় খাটতে হয়। তার বেশিরভাগ ক্লায়েন্টই নারী।
শোজি মোরিমতো বলেন, কিছু না করার জন্য লোক আমাকে ভাড়া নেয়। কিছু না করা বলতে, আমি তাদের পাশে বসে খাই, পান করি আর তাদের প্রশ্নের জবাব দেই, শুধু এটুকুই আমার কাজ। কোনো পরিশ্রমের কাজ করি না।
আরুনা সিদা নামের এক চাকুরিজীবী বলেন, যখন আমি বন্ধুদের সাথে থাকি তখন মনে হয়, তাদের আমার নানাভাবে আনন্দ দিতে হবে। কিন্তু মরিমতোর সাথে থাকলে নির্ভার থাকি। যখন ইচ্ছে কথা বলতে পারি আবার চাইলে চুপ থাকতেও পারি।
কুসা নামের আরেক চাকরিজীবী বললেন, বন্ধুদের সামনে পিকাচুর মতো ড্রেস পড়ে আসা আমার জন্য অসম্ভব ব্যাপার। অনেক সময় নিজের পছন্দের খাবারও তাদের খেতে বলা যায় না।
২০১৮ সালে চাকরি ছেড়ে টুইটারে একাউন্ট খুলে এ কাজ শুরু করেন শোজি মোরিমতো। এখন পর্যন্ত চার হাজারেরও বেশিবার ভাড়া খেটেছেন। অনেকেই একাধিকবার এসেছেন তার কাছে। এক নারীই তাকে ভাড়া নিয়েছেন ২৭০ বার।
শোজি মোরিমতো বললেন, আমি কোনো কাজই পারতাম না। আর তার জন্য প্রায়ই আমি হীনমন্যতায় ভুগতাম। আমার মাঝে মাঝে মনে হতো কিছু না করার জন্যই আমার জন্ম হয়েছে। একদিন মনে হলো, আমার এই কিছু না করতে পারার গুণটাকে যদি কাজে লাগানো যায়। এরপর থেকেই আমি মানুষকে সঙ্গ দেয়ার এ কাজ শুরু করি