যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো সরকারের মন্ত্রিসভায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চার মন্ত্রণালয়ের শীর্ষপদগুলোতে বসছেন অশ্বেতাঙ্গরা। নবনির্বাচিত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের মন্ত্রিসভায় ঘটেছে এমন অভূতপূর্ব ঘটনা।
ক্ষমতাগ্রহণের পরপরই যুক্তরাজ্যের নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে কোয়াসি কোয়ার্টেংকে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাস। এর ফলে কোয়ার্টেং হচ্ছেন দেশটির ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অর্থমন্ত্রী। ১৯৬০-এর দশকে ঘানা থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন তার বাবা-মা।
একইদিন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ পররাষ্ট্রমন্ত্রীও পেয়েছে যুক্তরাজ্য। গুরুত্বপূর্ণ এই পদে জেমস ক্লেভারলিকে নিয়োগ দিয়েছেন লিজ ট্রাস। তার মায়ের জন্ম সিয়েরা লিওনে এবং বাবা শ্বেতাঙ্গ।
যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় জাতিগত সংখ্যালঘু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্রীতি প্যাটেলের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান। তার বাবা-মা প্রায় ছয় দশক আগে কেনিয়া ও মরিশাস থেকে যুক্তরাজ্যে বসত গড়েছিলেন। এখন থেকে পুলিশ ও অভিবাসন সংক্রান্ত দায়িত্ব সামলাবেন ব্র্যাভারম্যান।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মন্ত্রী হিসেবে নাইজেরীয় বংশোদ্ভূত কেমি ব্যাডেনোচ নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাস।
ট্রাসের নতুন মন্ত্রিসভায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন মিশেল ডোনেলান। যুক্তরাজ্যের নতুন উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছেন ট্রাসের কাছের বন্ধু থেরেসে কফে।
সাবেক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী পেনি মরডান্টকে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের নেতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন কেমি ব্যাডেনচ। কর্ম ও পেনশন–বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন ক্লো স্মিথ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন কিট মাল্টহাউস।
ট্রাসকে দীর্ঘ সময় ধরে সমর্থন দিয়ে আসা জ্যাকব রিস–মগ ব্যবসা, জ্বালানি ও শিল্পকৌশল–বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন। লেভেলিং আপ মন্ত্রণালয়ের হাল ধরছেন সিমন ক্লার্ক। আর অ্যানি-ম্যারি ট্রেভেলিয়ানকে পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, নতুন মন্ত্রিসভায় পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন রনিল জয়াবর্দেনা। ব্রান্ডন লুইসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের। অর্থমন্ত্রীর পদ ছেড়ে আন্তসরকার সম্পর্ক ও সমতাবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন নাদিম জাহাবি। গতবারের মতোই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিজের দখলে রেখেছেন বেন ওয়ালেস।
মন্ত্রিসভার অন্যদের মধ্যে ক্রিস হিটন–হ্যারিস নর্দান আয়ারল্যান্ড–বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন। আলিস্টার জ্যাক ও রবার্ট বাকল্যান্ড যথাক্রমে স্কটল্যান্ড–বিষয়ক মন্ত্রী ও ওয়েলস–বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির (টরি) চেয়ারম্যান ও দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হয়েছেন জেক বেরি। অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লর্ড ট্রু। মন্ত্রিসভায় কপ–২৬–এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের পদ ধরে রেখেছেন অলোক শর্মা।
সদ্যঘোষিত মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মন্ত্রিসভার অনেকে। তাদের একজন সাবেক বিচারবিষয়ক মন্ত্রী ডোমিনিক রাব। নতুন মন্ত্রীদের তালিকায় নেই সাবেক পরিবহনমন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিভ বার্কলে।