সিনিয়র জাতীয় নারী ফুটবল দল কখনো ভারতকে হারাতে পারেনি। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সেই ভারতকেই ৩-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে পুরো ক্রীড়াঙ্গনে বইছে আনন্দের জোয়ার। জাতীয় দলের নারীদের যেকোনো প্রতিযোগিতায় এটাই ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়।
এর আগে, ২০১০ সালে কক্সবাজারে প্রথম নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবার ভারতের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ হেরেছিল ৬-০ গোলের ব্যবধানে। পরবর্তীতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের বিপক্ষে কখনো জয়ের মুখ দেখেনি বাংলাদেশ। দীর্ঘ এক যুগের মাথায় সেই ভারতকে হারিয়ে নারী ফুটবলে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ।
এদিন প্রথমার্ধে ভারতের জালে ২ গোল দিয়ে এগিয়েছিল বাংলাদেশ। জোড়া গোল করেছেন সিরাত জাহান স্বপ্না, অন্য গোলটি কৃষ্ণা রানী সরকারের। এই জয়ে বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে ভুটানের বিপক্ষে লড়বে। অন্য সেমিফাইনালে ভারত খেলবে নেপালের বিপক্ষে।
শুরু থেকেই ভারতকে চেপে ধরেছিল সাবিনা, কৃষ্ণা, স্বপ্নারা। এই বুঝি গোল হয় হয় করে ১২ মিনিটে ভারতের জালে বল পাঠিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন সিরাজ জাহান স্বপ্না। সাবিনার লম্বা পাস ধরে কৃষ্ণা রানী সরকার বল ঠেলে দেন স্বপ্নার প্লেসিংয়ে কেঁপে ওঠে ভারতের দল।
২২ মিনিটে ব্যবধান ২-০ করেন কৃষ্ণা রানী সরকার। থ্রোইংয়ের বল ধরে স্বপ্না পাস দেন কৃষ্ণাকে। কোন ভুল করেননি এই অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড। ঠান্ডা মাথায় গোল করে দেশকে এনে দেন ২-০ গোলের লিড।
আরো গোল হতে পারতো বাংলাদেশের। শুরুতেই সিরাত জাহান স্বপ্না ভারতের জালে বল পাঠালেও রেফারি গোল বাতিল করে দেন ফাউলের অযুহাতে। কৃষ্ণার গোলের আগেও ভালো একুট সুযোগ পেয়েছিলেন স্বপ্না। তার নেয়া কোনাকুনি শটি ডান দিকে ঝাপিয়ে রক্ষা করেন ভারতীয় গোলরক্ষক।
বাংলাদেশ ব্যবধান ৩-০ করে ৫৩ মিনিটে। প্রথম গোলদাতা স্বপ্না ব্যবধান ৩-০ করেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের ডিফেন্সচেরা এক পাস থেকে। দ্বিতীয়ার্ধে ভারত আপ্রাণ চেষ্টা করেছে ম্যাচে ফিরতে। কিন্তু বাংলাদেশের রক্ষণভাগের দৃঢ়তায় তারা গোলের তেমন সুযোগ তৈরিই করতে পারেনি।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন এই জয় সম্পর্কে বলেন, ‘আপনার সবাই জানেন আমাদের নারী ফুটবলাররা অনেক পরিশ্রম করে। অনেক ঈদ ও নানা উৎসবে তারা বাড়ি যায় না। তারা বাফুফে ভবনেই থাকে এবং সব সময় অনুশীলন করে। মেয়েদের এই পরিশ্রম এবং ধৈর্য্য ফল এনে দিয়েছে।’
নারী ফিফা র্যাংকিংয়ে ভারত বাংলাদেশের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে। এত শক্তিধর দলের সঙ্গে জেতার জন্য কোচ তার শিষ্যদেরই অবদান দিয়েছেন, ‘ভারত শুধু সাফ নয়, এশিয়ারই অন্যতম শক্তিশালী দল। মেয়েরা দারুণ খেলেছে এজন্যই আমাদের জয় এসেছে।’