কিছু দিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সীমান্তে গরু পাচারের অভিযোগে আক্রমণ শানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকে।কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উঠে এল গরুপাচার এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর টহলদারির পরিধি বাড়ানোর মতো স্পর্শকাতর প্রসঙ্গ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএসএফ-এর ডিজি পঙ্কজ সিংহ। সূত্রের মতে, পাচারকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া গরুকোথায় যায়, কী ভাবে রাখা হয়— সে বিষয়ে বিএসএফ কর্তার কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন কমিটি সদস্যরা।
কিছু দিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সীমান্তে গরু পাচারের অভিযোগে আক্রমণ শানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকে। রাজনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে কমিটির এক তৃণমূল সদস্যও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়ে বলেছেন, গবাদি পশু পাচারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। সরকারের উচিত, অবিলম্বে বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া। বিজেপির এক সদস্যও এই নিয়ে সরব হয়েছেন বলে খবর। জানা গিয়েছে, বিএসএফ-এর পক্ষ থেকে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, গরু পাচার একটি বড় সমস্যা।
অতীতে চোরাপথে পাচারকারীদের কাছ থেকে যে গরু উদ্ধার হত, তা শুল্ক বিভাগের হাতে তুলে দিত বিএসএফ। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বর্তমানে ওই গরুগুলিকে পশুদের নিয়ে কাজ করে থাকে— এমন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে তুলে দিতে বাধ্য বিএসএফ। সূত্রের মতে, যথেষ্ট সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভাবে প্রায় হাজারের কাছাকাছি গরুকে নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বিএসএফ। বড় সমস্যা হল, গরুগুলির অধিকাংশ বয়স্ক ও রুগ্ণ। ফলে অনেক সময় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাতে তুলে দেওয়ার আগেই বিএসএফ-এর নজরদারিতেই গরুগুলি মারা যাচ্ছে। সূত্রের মতে, গত তিন বছরে এমন ক’টি গরু মারা পড়েছে— তা বিএসএফের কাছে জানতে চেয়েছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
সীমান্তে সংঘাত কমাতে বিএসএফ-এর ভূমিকা নিয়েও জানতে চেয়েছেন কমিটির সদস্যরা। বাংলাদেশের সঙ্গে ২২১৭ কিলোমিটার সীমান্ত ভাগ করে পশ্চিমবঙ্গ। তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, বিএসএফ-এর টহলদারির পরিধি ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করার সিদ্ধান্তে রাজ্যের ১০টি জেলা প্রভাবিত হয়েছে। এই জেলাগুলিতেই রয়েছে লোকসভার ২১টি আসন, যা পশ্চিমবঙ্গের মোট আসনের অর্ধেক। ফলে রাজনৈতিক ভাবেও বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
দু’বছর আগে এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপরআঘাত হানছে। সেই চিঠিতে কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবি তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।