ক্যান্সার যখন হয় তখন জেনেটিক মিউটেশনের কারণে কোষগুলি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পায়। এটি শরীরের যে কোনো অঙ্গ বা টিস্যুতে ঘটতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ।
ক্যান্সার সাধারণত ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের বেশি হয়ে থাকে।গবেষণায় এটিই বলে। তবে ১৯৯০ এর দশক থেকে বিশ্বের অনেক অংশে ৫০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু ক্যান্সারের ঘটনা বাড়ছে।
প্রাথমিকভাবে শুরু হওয়া ক্যান্সারগুলো দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি তৈরি করে। যার মধ্যে রয়েছে বন্ধ্যাত্ব, হৃদযন্ত্রের রোগ এবং সেকেন্ডারি ক্যান্সার এবং পাশাপাশি ক্যান্সারের চিকিৎসায় এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে সৃষ্ট রোগ। ক্যান্সার ঝুঁকির কারণগুলো জানা থাকলে এটি প্রতিরোধ, প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা সহজ হয়।
সম্প্রতি প্রাথমিকভাবে শুরু হওয়া ক্যান্সারের সম্ভাব্য ঝুঁকির কারণ নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন গবেষণা হয়েছে। সেখান থেকে জানা যায় জীবনযাপন যেমন খাদ্য, ওজন এবং পরিবেশগত কারণ ক্যান্সার ঝুঁকিতে অবদান রাখতে পারে।
যে সব ক্যান্সারের ধরন নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে,
পর্যালোচনার জন্য, গবেষকরা সর্বপ্রথম ২০০০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ১৪টি ক্যানসারের ঘটনা নিয়ে বিশ্বব্যাপী তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন, যা ৫০ বছরের কম বয়সী প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
১. স্তন ক্যান্সার
২. কোলোরেক্টাল ক্যান্সার
৩. এন্ডমেট্রিয়াল ক্যান্সার
৪. খাদ্যনালী ক্যান্সার
৫. মাথা এবং ঘাড় ক্যান্সার৬. কিডনি ক্যান্সার
৭. মাল্টিপোল মেলোমা
৮. অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার
৯. মূত্রথলির ক্যান্সার
১০.পাকস্থলির ক্যান্সার
১১. থাইরয়েড ক্যান্সার
গবেষকরা এরপর ক্যান্সারের জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকির কারণগুলো নিয়ে গবেষণা করেন। পাশাপাশি টিউমারের বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়েও গবেষণা করেছেন। তাতে উঠে এসেছে,ক্যান্সার সাথে কিছুটা স্ক্রিন টাইমও দায়ী। যেমন মোবাইল। তারা আরও উল্লেখ করেছেন ক্যানসারের সাথে জীবনযাপনও সম্পর্কিত। এর মধ্যে ফাষ্ট ফুড এবং আশেপাশের পরিবেশও আছে।
যে ধরনের জীবনযাপন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে:
> ফাস্টফুড, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, রেড মিট, প্রক্রিয়াজাত মাংস, চিনি গ্রহন।
> কম ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহন।
> মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর হার কম এবং ফর্মুলা দুধের ব্যবহার বৃদ্ধি, মদ্যপান।
> ধূমপানের অভ্যাস, কিছু ব্যক্তিগত অভ্যাস।
> কম ঘুমানো, নাইট শিফটের কাজ কারণ এটি ওজন এবং ডায়াবেটিসের মতো ক্যান্সারের ঝুঁকির কারণগুলির প্রবণতা বাড়ায়।
> প্রজননে পরিবর্তন, জন্মের সংখ্যা হ্রাস, প্রথম এবং শেষ সন্তানের মধ্যে সময় নেওয়া এবং জন্মনিরোধক পিলের ব্যবহার বৃদ্ধি।
> শারীরিক কাজ কম করা এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন।
> টাইপ ২ ডায়াবেটিসের হার বৃদ্ধি।গবেষকরা আরও জানিয়েছেন যে ওপরের ১৪টি ক্যান্সারের মধ্যে আটটি পাচনতন্ত্রের সাথে সম্পর্কিত। ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ার কারণ হিসাবে আরো আছে পুষ্টির অভাব এবং অ্যান্টিবায়োটিক এর ব্যবহার। তাই জীবনের শুরু থেকে শরীরের প্রতি যত্নবান হলে ৫০ এর আগে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারেন।