বিজ্ঞান লেখক, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী সন্দেহে হাসনাত শেখ (২৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের মান্ডি থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আল-কায়েদার সদস্য বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
গ্রেপ্তার হাসনাতকে গতকাল বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। পরে তাকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
এসটিএফের দাবি, সিলেটে বাংলাদেশি ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী এই হাসনাত পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে একাধিক নাশকতামূলক কার্যকলাপ ঘটাতে চেয়েছিলেন।
এসটিএফ জানায়, গত ১ জুলাই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ব্যাঙ্গালোর থেকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় ফয়সাল আহমেদ ওরফে সাহেব মজুমদার ওরফে সহিদ মজুমদার নামে এক যুবককে। তিনি ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। ব্যাঙ্গালোরে পরিচয় বদলে একটি পোশাক কারখানার কর্মচারী হিসেবে কাজ করছিলেন। গ্রেপ্তারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হাসনাত শেখের খোঁজ পাওয়া যায়।
এসটিএফ সূত্রে আরও জানা গেছে, হাসনাতের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কালিয়াচকের সুজাপুর এলাকায়। কয়েক বছর আগে উত্তরপ্রদেশে পড়াশোনা করতে যান তিনি। সেখানেই জঙ্গি সংগঠন ‘আকিস’-এর নেতারা তার মগজধোলাই করেন। বাংলাদেশে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার।
এসটিএফের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সম্প্রতি জঙ্গি মডিউল তৈরির চেষ্টা করছে আল-কায়দা। গত কয়েক বছরের মধ্যে অনেক তরুণের মগজধোলাই করে তাদের জঙ্গি সংগঠনে টানা হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডে হাসনাত শেখের ঠিক কী ভূমিকা ছিল, ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় তার ভূমিকা এবং জঙ্গিগোষ্ঠীর হয়ে কী কাজ করতেন, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
হাসনাতের গ্রেপ্তারের খবর পাওয়ার পর তার মা জানান, স্থানীয় মাদ্রাসা থেকে লেখাপড়া করার পর হাসনাত বর্ধমানের একটি মাদ্রাসায় ভর্তি হন। এরপরে যান উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরে। তবে তিনি আসলেই কোনো আন্তর্জাতিক উগ্রপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কিনা তা পরিবারের লোকেরা জানেন না।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় ডায়মন্ড হারবার থানার দেউলপোতা এলাকার বাসিন্দা সমীর হোসেন শেখকে। আবদালপুরের একটি মসজিদে ইমামতি করতেন তিনি। ইমামতির আড়ালে জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ।