‘মহৎ শক্তি’র ভূমিকা পালনে মস্কোর সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক বেইজিং—বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে এমন অভিপ্রায় জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং।
উজবেকিস্তানের সমরখন্দে অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) এক সম্মেলনে পুতিনকে এ কথা বলেন চীনের প্রেসিডেন্ট। জিন পিং বলেন, ‘মহৎ শক্তির ভূমিকা পালনে, স্থিতিশীলতা বয়ে আনার একটি নির্দেশক ভূমিকা পালন করতে এবং সামাজিক টানাপড়েনে বিপর্যস্ত বিশ্বে ইতিবাচক শক্তি বয়ে আনতে চীন রাশিয়ার সঙ্গে প্রচেষ্টা শুরু করতে ইচ্ছুক। ’
এসসিওর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে রয়েছে চীন, রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার চার দেশ কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তান।
পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতে জিন পিং বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমরা কভিড-১৯ মহামারি কাটিয়ে উঠছি এবং ফোনে বহুবার কথা বলেছি এবং কার্যকরী কৌশলগত যোগাযোগ বজায় রেখেছি।তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার এই বৈঠক ব্যবহার করে আপনার সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যাগুলো নিয়ে মতবিনিময় করতে চাই।পুতিন এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন, ‘একমুখী বিশ্বব্যবস্থা তৈরির প্রচেষ্টা সম্প্রতি একদম বিকৃত একটি রূপ নিয়েছে এবং একেবারে অগ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। ’
তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে পুতিন বলেন, ‘এক চীন নীতি’কে সমর্থন করে রাশিয়া। তাইওয়ান প্রণালিতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘উসকানিমূলক’ তৎপরতার বিরোধিতার কথাও বলেন রুশ রাষ্ট্রপ্রধান। এ ছাড়া তিনি ইউক্রেন ইস্যুতে চীনের ‘ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানকে’ রাশিয়া গুরুত্ব সহকারে দেখছে বলে জানান।
ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার পর এবারই প্রথম মুখোমুখি হলেন পুতিন ও জিন পিং। সম্মেলনকালে টেবিলের দুই পাশে মুখোমুখি বসেন দুজন। ওই কক্ষে উপস্থিত আরো কয়েক ডজন ব্যক্তির মুখে এ সময় মাস্ক থাকলেও পুতিন বা জিন পিং কারো মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি।
এদিকে এসসিও সম্মেলনে অন্য বিশ্বনেতাদের পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও অংশ নিচ্ছেন। সে হিসাবে ২০২০ সালের চীন ও ভারতের সীমান্ত সংঘাতের পর এবারই প্রথম মুখোমুখি হচ্ছেন জিন পিং ও মোদি।
জিন পিং গত বুধবার উজবেকিস্তানে পৌঁছেছেন। এর আগে কাজাখস্তান সফর করেন তিনি। সেখানে চিনপিং দেশটির প্রতি পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন।
করোনাভাইরাস মহামারির প্রাথমিক ভাগের দিনগুলোর পর এবারই প্রথম নিজ দেশের বাইরে সফরে বের হয়েছেন জিন পিং। তাঁর এবং পুতিন দুজনের জন্যই এ সম্মেলনটি মূলত পশ্চিমকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর একটি সুযোগ, এমনটা মনে করেন পর্যবেক্ষকরা।