হাত বা পা অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যাওয়া রোগের নাম ‘ইডিমা’। এই রোগে অতিরিক্ত ফ্লুইড শরীরের কোষে জমা হলে হাত, পা, গোড়ালি বা বাহু ফুলে যেতে পারে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের নতুন রাজা তৃতীয় চার্লসের ফোলা হাতের ছবি আলোচনায় এসেছে। ছবি দেখে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ইডিমায় আক্রান্ত।
কারণ
সাধারণত ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিরা ইডিমায় বেশি আক্রান্ত হন। তবে গর্ভাবস্থায় নারীরাও এই সমস্যায় পড়েন। ওষুধের প্রভাবে বা শরীরের মধ্যে লুকিয়ে থাকা হৃদরোগ, কিডনি রোগ বা লিভার সিরোসিস রোগের লক্ষণ হিসেবে ‘ইডিমা’ হতে পারে। এ ছাড়া অনেকক্ষণ একইভাবে বসে থাকলে, অনেক বেশি লবণ দেওয়া খাবার খেলে, গর্ভাবস্থায় এবং মাসিক হওয়ার আগে শরীরের কোষে অতিরিক্ত ফ্লুইড জমা হয়ে বিভিন্ন অংশে পানি এসে ফুলে যেতে পারে। দীর্ঘদিন রক্তাল্পতায় এবং থাইরয়েড সমস্যায় ভুগলেও ইডিমা হতে পারে।
লক্ষণ
♦ ত্বক ফোলা, প্রসারিত এবং চকচকে দেখায়।
♦ ত্বকে চাপ প্রয়োগ করলে তা কয়েক সেকেন্ডের জন্য গর্ত হয়ে যায়।
♦ গোড়ালি, মুখ বা চোখের ফোলাভাব থাকে।
♦ শরীরের অংশ এবং শক্ত জয়েন্টগুলোতে ব্যথা থাকে।
♦ ওজন বৃদ্ধি বা ওজন হ্রাস পায়।
♦ তলপেটের আকার বেড়ে যাওয়া।
♦ হাঁটলে বা পরিশ্রম করলে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া এবং শ্বাসকষ্ট হওয়া।
করণীয়
একজন চিকিৎসক প্রথমেই রোগীর হিস্ট্রি নেবেন। এ থেকেই ইডিমার কারণ তাঁরা শনাক্ত করতে পারবেন। প্রয়োজনে এক্স-রে, আলট্রাসাউন্ড, ব্লাড টেস্ট ও ইউরিন টেস্ট দিতে পারেন। নিয়ম মেনে ওষুধ সেবন করলে এবং খাবারে লবণ ব্যবহারের মাত্রা কমিয়ে দিলে ইডিমা সেরে যায়। কোনো ওষুধের প্রভাবে ইডিমা হলে চিকিৎসক ওষুধ বদলে দেবেন। তবে কোনো রোগের কারণে হলে, ইডিমা নয় বরং সে রোগটির চিকিৎসা দরকার। খাদ্যতালিকায় লবণ এবং চিনি কম থাকলে তা শরীরে পানি কম ধরে রাখে এবং ইডিমা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে হাঁটা, জগিং, পা তুলে ধরার ব্যায়াম করা যেতে পারে।