কাঠমাণ্ডুতে পূর্ণতা পেয়েছে সাবিনা খাতুনের ফুটবলজীবন। যে ট্রফির অপেক্ষায় ছিলেন, সেটিও তাঁর পাওয়া হয়ে গেছে, ‘এটা আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত বলতে পারেন, সেরা টুর্নামেন্ট এটা। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে এটা আমার ফুটবল ক্যারিয়ারের শ্রেষ্ঠ অর্জন। ’ দুটি হ্যাটট্রিকসহ আট গোল করে তিনি হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা গোলদাতা, পাশাপাশি টুর্নামেন্ট সেরাও।
আগের পাঁচ সাফের ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে এবার ফুটবলকে রাঙিয়ে সাবিনা পৌঁছেছেন হিমালয়ে। সুযোগ ছিল ২০১৬ সালে শিলিগুড়ি সাফের ফাইনালেও। সেই প্রথম বাংলাদেশের এই টুর্নামেন্টে ফাইনাল খেলা এবং হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়া। এই হাহাকার তাঁর কণ্ঠে ছিল অনেক দিন। কাল থেকে মুছে গেছে সব, ‘এই দিনটির জন্য আমার ১২ বছরের অপেক্ষা ছিল। আজ (কাল) মনে হচ্ছে, সবই পেয়ে গেছি। কিছু অনুভূতি ব্যক্ত করা যায় না। এই আনন্দ, ভালো লাগা কেবলই আমার…। ’ এটা তাঁর সেরা টুর্নামেন্ট। ব্যক্তিগত অর্জন ও দলীয় সাফল্য—এর সঙ্গে সাবিনা অন্য কিছুর তুলনা করতে পারেন না, ‘আল্লাহ যখন দেন ছাপ্পর ফাড়কে দেন। সেটাই হয়েছে আমার ক্ষেত্রে। ’
নেপালের মাঠে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ফাইনালটি সাবিনাদের অত কঠিনই মনে হয়নি। মাচের আগে অধিনায়ক সতীর্থদের জন্য বলেছিলেন, ‘সবার উদ্দেশে একটা কথাই ছিল— আগের ম্যাচগুলো যেভাবে খেলেছে, সেভাবেই খেলতে হবে। দর্শক থাকবে, এটা স্বাভাবিক। তবে আমরা সেই চাপ না নিয়ে নিজেদের ফুটবল খেলার প্রত্যয় করেছিলাম। ’ সেমিফাইনালে চোট পাওয়া সিরাত জাহান স্বপ্নাকে নিয়ে দ্বিধা ছিল কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের মনেও। স্বপ্না খেলতে চাওয়ায় তাঁকে একাদশে রাখা হয়েছিল। সেটা ভুল ছিল, শুরুর কিছুক্ষণ বাদেই তাঁর বদলি হয়ে নামেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। তাঁর দুর্দান্ত সুন্দর গোলে লাল-সবুজের এগিয়ে যাওয়ার শুরু, এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি।
গ্রামগঞ্জ থেকে উঠে আসা মেয়েদের পরিশ্রমে ধরা দিয়েছে নারী ফুটবলের হিমালয়স্পর্শী সাফল্য। তাই সাবিনা বলছেন, ‘এই দলে আমিই সিনিয়র, বাকিরা আমার ছোট বোন। তাদের মান অনেক উন্নত হয়েছে। শামসুন্নাহার জুনিয়রের গোলেই তো সবাই বুঝেছে, এই শিরোপার সঙ্গে জড়িয়ে আছে সবার পরিশ্রম ও আন্তরিকতা। ’