নেপাল কাঁপিয়ে সাফে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন
নেপাল কঠিন প্রতিপক্ষ। কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জুতসই কৌশলটাই নিয়েছিলেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। জমাট বাঁধা ডিফেন্স আর ক্ষুরধার আক্রমণভাগের ওপর আস্থা রাখেন তিনি। নেপালের আক্রমণ রুখে দেন আঁখি আর মাসুরা পারভিনরা। অন্যদিকে মারিয়া মান্ডা আর মনিকা চাকমারা মাঝ মাঠে সাপ্লাই লাইনের কাজ করেন। আক্রমণভাগে সাবিনা-শামসুন্নাহার জুনিয়রর আর কৃষ্ণা রানী সরকাররা হয়ে উঠেন উত্তপ্ত গোলা বারুদ। সুযোগ পেলেই যেন ফুটে উঠবেন! শামসুন্নাহার জুনিয়রই প্রথম গোল উপহার দেন বাংলাদেশকে। সিরাত জাহান স্বপ্নার পরিবর্তে ১০ মিনিটে মাঠে নামেন তিনি। বদলি হিসেবে মাঠে নামার তিন মিনিটের মধ্যেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। ডি বক্সের ডান পাশ থেকে মনিকা চাকমার ক্রসে ছোটো ডি বক্সের ভিতর থেকে ডান পায়ের শটে গোল করেন তিনি। ম্যাচের ৪১ মিনিটে নেপালের ডিফেন্ডারদের ভুলে বল পেয়ে ডি বক্সে বাড়িয়ে দেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। ডি বক্সের ভিতর থেকে গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে গোল করেন কৃষ্ণা রানী সরকার। ম্যাচের ৭০ মিনিটে অনিতা বাসনেট নেপালের পক্ষে একটি গোল শোধ দিলেও ৭৭ মিনিটে কাউন্টার আক্রমণ থেকে গোল করে ব্যবধান ৩-১ করেন কৃষ্ণা রানী।
টুর্নামেন্টজুড়েই গোলরক্ষক রূপনা চাকমা গোলবারের সামনে ছিলেন অতন্দ্র প্রহরীর মতো। ফাইনালে নেপালের বেশ কয়েকটি আক্রমণ তিনি রুখে দেন। বিশেষ করে ম্যাচের ৩৬ মিনিটে অনিতার ফ্রি কিক শটটা রুখতে গিয়ে পাখির মতো উড়ে যান তিনি। পুরো টুর্নামেন্টে কেবল একটাই গোল হজম করেছেন তিনি। টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক হয়েছেন রূপনা চাকমা। টুর্নামেন্টসেরা খেলোয়াড় হয়েছেন সাবিনা খাতুন। বাংলাদেশের অধিনায়ক সাবিনা সেরা গোলদাতাও হয়েছেন। ফেয়ার প্লে ট্রফিও পেয়েছে বাংলাদেশ।ভারতের মতোই নেপালের বিপক্ষে আগে কখনো জিততে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। ভারতকে প্রথম হারের তিক্ত স্বাদ গ্রুপ পর্বেই দিয়েছেন মেয়েরা। এবার প্রথমবারের মতো হারাল নেপালকেও। তাও ফাইনালে! নেপালের বিপক্ষে এর আগে আটবার খেলে ছয়বারই হেরেছে বাংলাদেশ। ড্র করেছে দুইবার। সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ একবারই ফাইনাল খেলেছে। ২০১৬ সালে সেই ফাইনালে ভারতের কাছে পরাজিত হন সাবিনারা। নেপাল গতকালের আগে আরও চারবার সাফের ফাইনাল খেলেছে। প্রতিবারই ভারতের কাছে হেরেছে তারা। গতকাল দুই দলেরই সুযোগ ছিল নতুন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। নেপালের মেয়েদের কাঁদিয়ে সুযোগটা কাজে লাগিয়ে শিরোপার স্পর্শ পেল বাংলাদেশ।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন : বাংলাদেশের মেয়েরা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিনন্দন জানিয়েছেন। পাশাপাশি অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।