মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকেল ৩টার দিকে মুক্তারপুরের পুরোনো ফেরিঘাট এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুরো এলাকায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক, বিএনপি নেতা-কর্মীসহ অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ সময় ১০-১২টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে বিএনপি নেতা-কর্মীরা।
সংঘর্ষে আহত পুলিশ ও সাংবাদিকদের মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আর আহত বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় জাহাঙ্গীর হোসেন নামের এক বিএনপি কর্মীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরের উপকণ্ঠ মুক্তারপুর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনার পর থেকে মুক্তারপুর এলাকার সকল দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিকেলে সদর উপজেলা, মুন্সিগঞ্জ শহর ও মিরকাদিম পৌর বিএনপি শহরের মুক্তারপুর এলাকার পুরাতন ফেরীঘাট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করে। এদিন দুপুর আড়াইটা থেকে মুক্তারপুর এলাকার আশপাশে বিএনপি নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকে। পুলিশও আগে থেকেই অবস্থান নেয়। পরে কর্মসূচি থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এগোতে চাইলে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাধা দেয়। এ সময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। জবাবে পুলিশও রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যায়।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি তারিকুজ্জামান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। বর্তমানে সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে একাধিক রাউন্ড টিয়ারসেল ও ফাঁকা গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। তবে কত রাউন্ড গুলিবর্ষণ করা হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি তিনি।
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সদর উপজেলা, মুন্সিগঞ্জ শহর ও মিরকাদিম পৌর বিএনপির নেতা-কর্মীরা মুক্তারপুর ফেরিঘাট এলাকায় জড়ো হচ্ছিল। এ সময় দুই দিক থেকে পৃথক পৃথক মিছিল আসছিল। হঠাৎ পুলিশ আক্রমণাত্মক হয়ে মিছিলের ব্যানার কেড়ে নেয় ও লাঠিচার্জ করে। এতে বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।